আর মাত্র কয়েকটা দিন৷ তারপরেই ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচন। ইতিমধ্যেই নিজেদের মতো করে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে সব দলই। তবে তার মধ্যেও নজর কেড়েছে এই কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থীর প্রচারের অভিনব কায়দা। ধূপগুড়ি বিধানসভা উপনির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায় প্রচার করছেন ভাওয়াইয়া গান গেয়ে। উত্তরবঙ্গে জনপ্রিয় এই ভাওয়াইয়া সঙ্গীত। তাই এই গানের মাধ্যমে আরও বেশি মানুষের কাছে নিজের বক্তব্য নিয়ে যাওয়া যাবে বলে আশাবাদী প্রার্থী।
advertisement
আরও পড়ুন: ভামোরি দেবীর মন্দির থেকে কারবালা চা বাগান, ভোটের আগে জমিয়ে প্রচারে তৃণমূল প্রার্থী
উত্তরবঙ্গে ভাওয়াইয়া লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পী ঈশ্বরচন্দ্র রায়ই এবার ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বামফ্রন্ট মনোনীত সিপিএম প্রার্থী। ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বামফ্রন্ট প্রার্থীকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ঈশ্বরচন্দ্র রায় নিজেই গান লেখেন এবং সুর দেন। বেতারেও তিনি নিয়মিত লোকগান পরিবেশন করে থাকেন। ধূপগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে তিনি সুপরিচিত।
শুধু গানই নয়, রাজবংশী ভাষা নিয়েও গবেষণা রয়েছে ঈশ্বরচন্দ্রের।গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘের সঙ্গে তিনি যুক্ত। যুব আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে সিপিএম-র সদস্যপদ অর্জন করেছিলেন একসময়৷ বর্তমানে ঈশ্বরচন্দ্রবাবু পশ্চিমবঙ্গ সামাজিক ন্যায় মঞ্চের জলপাইগুড়ি জেলার সভাপতি। এর আগে পঞ্চায়েতের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি, ধূপগুড়ির বারঘড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হিসেবে দায়িত্বও পালন করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘দিচ্ছে ডাক এই ২৮’, প্রতিষ্ঠা দিবসের আগে তুঙ্গে প্রস্তুতি! ২৫-এ পা দিচ্ছে টিএমসিপি
এছাড়াও, সিপিএম তথা বামফ্রন্টের তরফেও প্রচার চালানো হচ্ছে প্রার্থীর তরফে। গতানুগতিক দেওয়াল লিখন, পোস্টার, হোর্ডিং, পথসভা, জনসভা, মিছিল থেকে সোশ্যাল মিডিয়া। প্রচারে মূলত পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের তরফে সন্ত্রাস ও ভোটলুট, শাসকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা গরু, কয়লা, বালি, শিক্ষাক্ষেত্র সহ চাকরিতে দুর্নীতির অভিযোগকে সামনে রাখা হচ্ছে বলে স্থানীয় বাম সংগঠন সূত্রের খবর।
একই ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধেও প্রচারের সুর চড়িয়েছেন দলের প্রচারের দায়িত্বে থাকা নেতারা। সেখানেও মূল্যবৃদ্ধি, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি সহ একাধিক অভিযোগকে প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদল কীভাবে একে অপরকে সাহায্য করে মূল সমস্যা থেকে নজর ঘোরেতে চাইছে সেকথাও বলা হচ্ছে।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের পক্ষ থেকে কী করা হয়েছে মানুষ দেখেছে। মনোনয়ন করতে বাঁধা, মনোনয়ন করলে প্রার্থীর বাড়িতে গিয়ে হুমকি। কথা না শুনলে আক্রমণ করে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে। মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে ভোটের দিন মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। সন্ত্রাসের মাধ্যমে ছাপ্পা দেওয়া হয়েছে। তাতেও কাজ না হলে ভোট গণনা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট লুট করা হয়েছে। তাতে সফল না হলে জোর করে বিজয়ী প্রার্থীর সার্টিফিকেট শাসকদলের হেরে যাওয়া প্রার্থীকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কমিশনকে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। বাহিনীকে ব্যবহার করা হয়নি। আমরা মানুষকে বলছি এর বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে। এবার জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভোট পরিচালনা করবে। বাহিনী থাকবে। মানুষ ভোট দেবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, বিভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে, মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে। সাগরদিঘির ফলাফলের পুনরাবৃত্তি হবে এখানেও।’’