শুখা মরসুমে গতি হারিয়েছে কচুরীপানাময় টাঙন নদী। কাছেই বুলবুলচণ্ডী শ্মশান। সাধারন মানুষ সচরাচর কম আসাযাওয়া করেন এই এলাকায়। এমন নির্জন নদী তীরেই গত চারদিন ধরে রয়েছেন নদীয়ার নবদ্বীপের বাসিন্দা নিরঞ্জন হালদার। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে কীর্ত্তন করে বেড়ানোই তাঁর কাজ। দিনকয়েক আগে এভাবেই এসে পৌছোন বুলবুলচণ্ডীর ডুবাপাড়ায় ভাগ্নীর বাড়িতে। বিভিন্ন লোক সমাগমের এলাকায় ঘুরে বেড়াতে হয় বলে আত্মীয়রা তাঁকে চিকিৎসক দেখানোর পরামর্শ দেন। বুলবুলচণ্ডী হাসপাতালে চিকিৎসকেরা তাঁর যাতায়াতের তথ্য নিয়ে ‘হোম কোয়ারেনটাইন’ এর কথা বলেন। কিন্তু,আত্মীয়ের বাড়িতে পাঁচজনের সংসারে তাঁকে আলাদাভাবে রাখার মতো সুবিধে নেই। আবার গ্রামের প্রতিবেশীদের বাড়িতেও রাখার ব্যবস্থা করা যায়নি। শেষে নদীর ঘাটে নৌকোয় এখন তাঁর ঠিকানা।
advertisement
টাঙন নদীর ঘাটে একচালা নৌকোয় একা একাই দিনরাত পার করছেন নিরঞ্জন হালদার। অশক্ত শরীরে নিজে থেকে কাজ করার মতো তেমন সামর্থ নেই। আত্মীয়রা মাঝেমধ্যে খাবার নিয়ে আসছেন নদীপারে। দুর থেকে সেই খাবার দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। নৌকোর একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সেই খাবার নিচ্ছেন। রাতে নৌকোতেই মশারী টাঙিয়ে ঘুমচ্ছেন। তাঁকে সাহায্য এগিয়ে এসেছে এলাকার কিছু সহৃদয় যুবক। নৌকোয় জীবনযাপনের খবর পেয়ে চাল,ডাল,ডিম,আলু পৌছে দিয়ে প্রতিবেশীদের রান্না করা খাবার করে দেবার অনুরোধ করেছে যুবকদের দল। আত্মীয়রা বলছেন, ইচ্ছে থাকলেও ঘরে ঠাঁই দেওয়া যায়নি। কবে পরিস্থিতির বদল হবে, কবে বাড়ি ফিরতে পারবেন তা অনিশ্চিত। তবে এভাবে করোনার বিরুদ্ধে অসম লড়াই যথেষ্টই কঠিন। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে কেন প্রশাসনিক উদ্যোগে এখনও নিরাপদ আশ্রয়ে পৌছে দেওয়া যায়নি বৃদ্ধকে।
Sebak Deb Sharma