জেলা প্রশাসনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, সকাল ৯.৪৫ পর্যন্ত শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে নির্বিঘ্নেই চলছিল ভোটগ্রহণ৷ সেই সময় ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কাছে মানিক মহম্মদ নামে একটি বালক অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ সেই সময় স্থানীয় দু' তিন জন মহিলা কিশোরের শুশ্রুষা করছিলেন৷ তা দেখেই ওই বুথে কর্তব্যরত সিআইএসএফ জওয়ানরা সাহায্য করতে এগিয়ে যান৷ ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কাছে রাখা সেক্টর মোবাইল ভ্যানে করে ওই বালককে হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তাবও দেন তাঁরা৷
advertisement
অভিযোগ, তখনই স্থানীয় কিছু বাসিন্দা ভেবে নেন, সিআইএসএফ জওয়ানরাই ওই বালককে মারধর করায় সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে৷ সঙ্গে সঙ্গে চিৎকার চেঁচামেচী জুড়ে দেন তাঁরা৷ জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী, এর ফলে ৩০০ থেকে ৫০০ জন এলাকাবাসী ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সামনে জড়ো হয়ে যায়৷ তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু মহিলার হাতে বাড়িতে থাকা ধারালো সরঞ্জামও ছিল, যা দিয়ে গুরুতর আঘাত করা সম্ভব৷ অভিযোগ, সিআইএসএফ জওয়ানদের ঘিরে ধরে তাঁদের উপর হামলা চালাতে উদ্যত হন গ্রামবাসীরা৷ কয়েকজন সিআইএসএফ জওয়ানদের আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ৷ ভোট কর্মীদের উপরও চড়াও হয় উন্মত্ত জনতা৷ এর ফল প্রাথমিক ভাবে কয়েকজন সিআরপিএফ জওয়ান এবং বুথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা হোমগার্ডও আহত হন৷
এই পরিস্থিতিতে সঙ্গে সঙ্গে আরও বাহিনী চেয়ে সাহায্য চান সিআইএসএফ জওয়ানরা৷ কাছেই থাকা ক্যুইক রেসপন্স টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তাদের গাড়িটিও ভাঙচুর করা হয়৷ এর পরেই জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে প্রথমে শূন্যে গুলি চালান সিআইএসএফ জওয়ানরা৷ কিন্তু তাতেও উন্মত্ত জনতা পিছু না হঠায় আত্মরক্ষায় এবং ইভিএম সহ সরকারি সরঞ্জাম বাঁচাতে ভিড় লক্ষ্য করেই গুলি চালান সিআইএসএফ জওয়ানরা৷ এপ পরেই ছত্রভঙ্গ হয় জনতা৷
জেলা প্রশাসনের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হওয়ার পাশাপাশি সাত জন আহত হয়েছেন৷ সিআইএসএফ এর রিপোর্টেও দাবি করা হয়েছিল, আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে বাহিনী৷
কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত চার জনের নাম ছালমু মিয়াঁ (২৩), জোবেদ আলি (২০), আমজাদ হোসেন (২৮) এবং নামিদ মিয়াঁ (২০)৷
ইতিমধ্যেই কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোচবিহারে প্রবেশ করতে পারবেন না কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা৷ মাথাভাঙা কাণ্ডের জেরে এই নির্দেশ জারি করল নির্বাচন কমিশন৷ অবিলম্বে এই নির্দেশ কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে৷