কিছুদিন আগে শঙ্কর ঘোষের বাড়িতে হঠাৎই উড়ে আসে একটি পাখি। উড়তে উড়তে চলন্ত পাখায় ধাক্কা খেয়ে মেঝেতে পড়ে যায় সে। দেখতে পেয়ে দ্রুত পাখিটিকে উদ্ধার করেন শিলিগুড়ির বিধায়ক। দেখা যায় ভীষণ ভাবে আহত হয়েছে পাখিটি। পাখার ব্লেডে কেটে গিয়েছে তার ডানা। এবার কী হবে? কী ভাবে চিকিৎসা হবে? এই পাখিটা কী খাবে? হাজার চিন্তা শুরু হল।
advertisement
এবার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার জন্য একটার পর একটা ফোন ঘোরাতে শুরু করেন তিনি। শুরু হয় চিকিৎসা। উৎকণ্ঠার মধ্যে চলে বেশ কিছু দিন। বিধায়ক হিসেবে, রাজনীতির লোক হিসেবে এদিক ওদিক ছুটতে হয়। কিন্তু পাখিটার কথা মনে পড়ে মাঝে মধ্যেই। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠে ছোট্ট পাখিটি। এখন সে বিধায়কের বন্ধু হয়ে গিয়েছে। কিছুদিন দেখা না হলে মন খারাপ হয় শঙ্করের। তাই সময় পেলেই বাড়িতে গিয়ে একবার দেখে আসা। হাতে নিয়ে আদর করা। সেই ছবি ফেসবুকে আপলোড করা। আরও কতকিছু চিন্তা ভাবনা চলতে থাকে। তবে একই সঙ্গে আক্ষেপ হয়। যার আকাশে ওড়ার কথা সে ডানা হারিয়েছে। আকাশে আর ওড়া হবে না ভেবে মনও খারাপ হয় বিধায়কের৷
শঙ্কর ঘোষ বলেন, “পাখিটা হঠাৎ করে ঘরে ঢুকে পড়েছিল। ফ্যানের ব্লেডে ধাক্কা লেগে পড়ে যায়। তার ডানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাখিটা আকারে খুবই ছোট। চড়ুই পাখির থেকেও ছোট। তারপর বাড়িতে তার শুশ্রষা শুরু করা হয়। তবে পাখিটা কী খাবে সেটা প্রথমে বুঝতে পারছিলাম না। তার পরে মধু এবং ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে ভিটামিন দেওয়া হয়। হলুদ দেওয়া, দুধ খাওয়ানো এসব করতে থাকি। তারপর বাকিটা কিছুটা সুস্থ হতে শুরু করে। তবে যেটা খারাপ লাগার বিষয় যে পাখিটা আর উড়তে সক্ষম হবে না। তবে তাকে বাঁচানো সম্ভব। তাই সেই ভাবেই রাখা হয়েছে। যার ওড়ার কথা আকাশে সে যদি বাড়িতে থাকে সে হয়তো সবার সঙ্গে খেলাধুলা করতে পারে কিন্তু আকাশে আর ওরা হয় না।”
অনেক কম বয়স থেকেই রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন শিলিগুড়ির নেতা শঙ্কর ঘোষ। মানুষের পাশে দাঁড়াতে অসুস্থ মানুষকে নিয়ে বহুবারই হাসপাতালে ছুটতে হয়েছে। রাত জেগে রোগীর চিকিৎসা করাতে হয়েছে। এবার একটি পাখির সেবা করে অন্যরকম অনুভূতি পেয়েছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক৷