কিন্তু একসঙ্গে একাধিক কামরা থেকে চেন টানায় ট্রেনের বগির নীচে থাকা ভাল্ব খুলে যাওয়ায় ট্রেন আর এগোচ্ছিল না৷ বর্ষার জলে ভয়াল তিস্তার উপরে এ ভাবে যাত্রী বোঝাই ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকা ছিল ঝুঁকিপূর্ণ৷ শেষ পর্যন্ত রেলসেতুর উপরেই ট্রেনের নীচ দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে গিয়ে ওই ভাল্ব জোড়া লাগালেন ট্রেন চালক৷ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই কাজের জন্য ওই ট্রেন চালককে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পেল৷
advertisement
জানা গিয়েছে, গতকাল জলপাইগুড়িগামী বিজি প্যাসেঞ্জার ট্রেনটিতে এই ঘটনা ঘটে৷ জানা গিয়েছে তিস্তা ব্রিজের পরেই জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন। শিব তীর্থ ময়নাগুড়ির জল্পেশ মন্দিরে যেতে হলে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে নামলে যাত্রীদের সুবিধে হয়। কিন্তু তারও আগে তিস্তা ব্রিজের কাজে নামতে পারলে প্রায় ৫ কিলোমিটার পথ কমে যায় শিব ভক্তদের। তার উপর তিস্তা নদীর জল নিয়ে শিব তীর্থ জল্পেশ মন্দিরে যাওয়া পুরনো রীতি রয়েছে।
এক সময় শ্রাবণ মাস জুড়ে পূণ্যার্থীদের সুবিধের জন্য তিস্তা ব্রিজের কাজে বিভিন্ন ট্রেন এক-দুই মিনিট দাঁড় করাতো ভারতীয় রেল। কিন্তু স্টেশন ছাড়া এ ভাবে ট্রেন দাঁড় করানো বেআইনি হওয়ায় সম্প্রতি তা বন্ধ করে দিয়েছে রেল । আর তার জেরে বেআইনি উপায়ে এভাবে ট্রেন দাঁড় করিয়েছে শিব ভক্তরা।
এদিন বি জি প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি ব্রিজের একেবারে মাঝখানে চলে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। একাধিক বগিতে চেন টানার ফলে কয়েকটি বগির নীচে ভাল্ব খুলে যায়। আর রেল ব্রিজে ট্রেনের তলা দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে গিয়ে ভাল্ব জুড়তে হয় সহকারী চালক কুমার সৌরভকে। এই সুযোগে অবশ্য কিছু পূণ্যার্থী সেতুর বাইরে থাকা বগি থেকে নেমে তিস্তা নদী থেকে জল তুলে নেন। সেখান থেকে জল নিয়ে জল্পেশ মন্দিরে রওনাও দেন।
এই ঘটনায় তুমুল হইচই শুরু হয়। ট্রেনের চালকের সাহসিকতাকে কুর্ণিশ জানিয়েছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশন। সহকারী চালককে পুরুষ্কৃত করার কথা ঘোষণা করেন আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম অমরজিৎ গৌতম। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “এই রকম ঘটনা মাঝে মধ্যেই হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে চেন টানার জন্য অভিযুক্ত যাত্রীরা ধরাও পড়ছেন৷ আবার কখনও কাউকে আমরা ধরতে পারছি না। তবে রবিবারের ঘটনা নজিরবিহীন। ওই সহ চালককে পুরুষ্কৃত করব আমরা। তার কারণ খরস্রোতা তিস্তা নদীর ব্রিজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খুলে যাওয়া ভাল্ব জুড়েছেন তিনি।”