আলিপুরদুয়ার জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি প্রকাশ বরাইক জানিয়েছেন, এখন থেকেই বুথ স্তরের প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছতে হবে সকলকে। দায়িত্ব ভাগ করে এটি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলার চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামী জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করাই মূল লক্ষ্য। তাই আগে থেকেই রাস্তায় নামতে বলা হয়েছিল৷ ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলার গ্রাম পঞ্চায়েতের গরিষ্ঠ অংশ, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ তৃণমূলের দখলে থাকলেও ২০১৯- এর লোকসভা নির্বাচন থেকে ধস নামতে শুরু করে। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে যার রেশ থেকে গিয়েছিল।
advertisement
আরও পড়ুনঃ পঞ্চায়েত ভোটের ময়দানে ওঁরা কারা? গোটা গ্রাম উত্তেজনায় ফুটছে
চা-বাগান, আন্তর্জাতিক সীমানা, আদিবাসী-রাজবংশী ভোট ও রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ পর্যটনক্ষেত্র। একাধিক সুযোগ সুবিধা থাকলেও এই জেলার খারাপ ফল অবশ্যই চিন্তায় রেখেছে শাসকদলকে৷ তাই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকেই এই জেলার সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল অনুযায়ী এই জেলার গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যা ৬৬। যার মধ্যে তৃণমূলের দখলে ছিল ৪৩। বিজেপি-র দখলে ছিল ৯ আসন। বাম ও কংগ্রেস একটি করে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে৷ অন্যান্যরা জয়ী হয় ১২ আসনে। পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যা ছিল ৬। তার মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ৫। বিজেপি পেয়েছিল একটি। বাম-কংগ্রেস-সহ বাকিরা একটিও আসন পায়নি ৷
আরও পড়ুনঃ পঞ্চায়েতে গ্রামের ছেলেকেই চাই! স্থানীয় যুবককে দিয়ে যা করাল গ্রামবাসীরা…! অবাক TMC-CPIM-BJP
জেলা পরিষদের মোট আসন সংখ্যা ১৮। তৃণমূল পেয়েছিল ১৭ আসন। বিজেপি পেয়েছিল মাত্র একটি আসন ৷ এই জেলার বেশিরভাগ অংশের ভোটই চা-বলয়ের ভোট। যদিও তৃণমূলের সেই ভোটব্যাঙ্কে ধস নামে ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে। বিজেপি প্রার্থী জন বার্লা প্রায় ৫৫.২ শতাংশ ভোট পান৷ তৃণমূল প্রার্থী দশরথ তিরকে পেয়েছিলেন মাত্র ৩৭.৩ শতাংশ ভোট।
২০২১-এ এই জেলায় বিধানসভা ভিত্তিক ফলের বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে এই জেলার ৫ বিধানসভা আসনের প্রাপ্ত ভোট অনুযায়ী বিজেপি পেয়েছে প্রায় ৫০.৪ শতাংশ আর তৃণমূল পেয়েছে ৪০.৪ শতাংশ ভোট। ফলে জেলার ৫ বিধানসভা আসনই হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। ফালাকাটা বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী দীপক বর্মণ পেয়েছিলেন ৪৬.১৭ শতাংশ ভোট। তৃণমূল প্রার্থী সুভাষ চন্দ্র রায় পান মাত্র ৪৪.৯ শতাংশ ভোট। কুমারগ্রাম বিধানসভা যেখানে বিজেপি প্রার্থী মনোজ ওঁরাও পেয়েছিলেন ৪৮.১৭ শতাংশ ভোট। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী লুইস কুজুর পান ৪৩.৪৪ শতাংশ ভোট।
মাদারিহাট বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রাজেশ লাকড়া পেয়েছিলেন ৩৬.৫৭ শতাংশ ভোট৷ সেখানে মনোজ টিগগা পান ৫৪.৩৫ শতাংশ ভোট। কালচিনি বিধানসভায় বিজেপি প্রার্থী বিশাল লামা পেয়েছিলেন ৫২.৬৬ শতাংশ ভোট। পাশাং লামা তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী হন, পেয়েছিলেন ৩৮.০৭ শতাংশ ভোট। আলিপুরদুয়ার বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থী সুমন কাঞ্জিলাল পান ৪৮.১৯ শতাংশ ভোট, তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সৌরভ চক্রবর্তীর দখলে ছিল ৪১.০১ শতাংশ ভোট।
ABIR GHOSHAL