প্রায় সাড়ে পাঁচশো বছর আগে থেকে এই কালী মন্দির এবং মন্দির সংলগ্ন আড়িয়াদহ শ্মশান তান্ত্রিক-সাধকদের সাধনক্ষেত্র হিসেবে বিখ্যাত হয়েছে। শোনা যায়, শ্রীরামকৃষ্ণের মায়ের শেষকৃত্য এই শ্মশানেই সম্পন্ন হয়েছিল। এই শ্মশানের কাছেই রয়েছে মুক্তকেশী কালী মন্দির। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ এই মন্দিরে আসতেন। এই মন্দিরে পুরোহিতের আসনে বসে তিনি দেবীর পুজোও করেছেন। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, দেবী মুক্তকেশী অত্যন্ত জাগ্রত। মা মুক্তকেশী ভক্তের কামনা, বাসনা পূরণ করেন এমনটাই প্রচলিত রয়েছে লোকোমুখে।
advertisement
এককালে এই মন্দির ছিল তালপাতার। তারপর ১২৪৭ বঙ্গাব্দে তথা ইংরেজি সন ১৮৪০ সালে পাকা মন্দির হিসেবে সংস্কার হয়। মন্দিরটি পশ্চিমমুখী, কিন্তু মন্দিরের অর্থাৎ দেবী কালিকার গর্ভগৃহ দক্ষিণমুখী। কার্তিক অমাবস্যায় এই মন্দিরে জাঁকজমকের সঙ্গে শ্যামা পুজো আয়োজিত হয়। এছাড়াও দুর্গা পুজোর সময় বিশেষ পুজো হয়। মুক্তকেশী মন্দিরে অক্ষয় তৃতীয়া ও অন্নকূট উৎসব পালিত হয়। মন্দিরে বলির চল রয়েছে। একসময় এখানে পাঁঠা বলি হত। এখন বর্তমানে চালকুমড়ো, আখ, কলা ইত্যাদি বলি দেওয়া হয়। আর এভাবেই চলে আসছে নিত্যপুজো।
বছরের তিন সময়ে এখানে দেবীকে তিন রূপে পুজো করা হয়। জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণী অমাবস্যায় আয়োজিত হয় ফলহারিণী কালী পুজো। কার্তিক মাসে হয় দীপান্বিতা কালী পুজো এবং মাঘ মাসের কৃষ্ণ চতুর্থীতে রটন্তী কালী পুজোও এখানে মহাসমারোহে আয়োজিত হয়।
আরও পড়ুন : ব্যস্ততা ও শরিকি বিবাদে ধ্বস্ত বহু বনেদি পরিবার, কুলদেবতার বিগ্রহ পূজিত হচ্ছেন বংশের কুলপুরোহিতের বাড়িতে
সকাল ৭ থেকে বেলা ১১ পর্যন্ত ও বিকেল পাঁচটা থেকে রাত্রে আটটা পর্যন্ত মায়ের গর্ভগৃহ খোলা থাকে। তবে বিশেষ পুজোর তিথিগুলোতে মন্দির সারাদিনই খোলা। এমন জাগ্রত মা মুক্তকেশীর মন্দিরের অপার মহিমায় ভক্তদের বিশেষ সমাগম ঘটে।