জাতীয় হিন্দি দিবসে যেভাবে হিন্দিকে গুরুত্ব দেওয়ার সওয়াল করেন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৷ তাতে দেওয়াল লিখনটা স্পষ্ট বলে মনে করছেন অনেকেই। দাবিটা পুরনো। সেই জনসংঘের আমলের। এবার কী সেটাই কার্যকর করার পথে মোদি সরকার? কেন্দ্রের এই হিন্দি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব কমল হাসান ৷
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি বার্তা ৷ কমল হাসান বলেন, ‘জোর করে হিন্দিকে চাপিয়ে দিলে তা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া হবে না ৷ তামিল আমাদের মাতৃভাষা ৷ ঐক্যবদ্ধ ভারত কারোর একচেটিয়া সম্পত্তি নয় ৷ জাল্লিকাট্টু শুধুমাত্র একটা প্রতিবাদ ছিল ৷ নিজেদের মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন তার চেয়েও অনেক বড় হবে ৷’
advertisement
একইসঙ্গে দক্ষিণের এই জনপ্রিয় অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ ভিডিও বার্তায় বলেছেন, ‘আমরা সব ভাষাকে সম্মান করি ৷ মাতৃভাষা তামিল হলেও আমরা খুব খুশি হয়েই বাংলায় লেখা জাতীয় সঙ্গীত গাই, কারণ কবি ভারতের সমস্ত ভাষাকে সম্মান দিয়েই গানটি লিখেছিলেন ৷ সেই কারণেই এটি দেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃত ৷’
শনিবার অমিত শাহ বলেন, ‘দেশের স্বার্থেই অভিন্ন ভাষার প্রয়োজন ৷ উত্তর পূর্বেও বাধ্যতামূলক ভাবে হিন্দি শেখানো হবে ৷ সেখানকার প্রতিটি বাচ্চাও হিন্দিই বলবে ৷ কারোরই হিন্দিতে আপত্তি থাকা উচিত নয় ৷’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হিন্দি সওয়ালের বিরোধিতায় এককাট্টা বিরোধীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদের ঝড় ৷ মাতৃভাষা তামিলকে নিয়ে আন্দোলনে দক্ষিণীরা ৷ তাদের আন্দোলনকে আরও জোরদার করল কমল হাসানের ভিডিও বার্তা ৷
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্যে প্রতিবাদে সরব হন ডিএমকে নেতা স্ট্যালিনও ৷ বলেন, ‘আমরা ইন্ডিয়ার নাগরিক। হিনদিয়ার নয়। আমরা বরাবর হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার বিরোধিতা করেছি। প্রধানমন্ত্রী এনিয়ে অবস্থান স্পষ্ট না করলে আন্দোলন হবে ৷’
ট্যুইটে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনি লেখেন, ‘আমাদের উচিত সব ভাষা ও সংস্কৃতিকে সম্মান জানানো। আমরা অনেক ভাষাই শিখতে পারি, কিন্তু মাতৃভাষাকে কখনই ভোলা উচিত নয় ৷’
২০১৪ সালের পরই এক দেশ - এক ভাষা নিয়ে বিজেপির ওপর চাপ বাড়িয়েছে আরএসএসের মতো সংগঠন। এতে হিন্দি বলয়ে ভোটের অঙ্ক তো আছেই, সঙ্গে আছে ভাষা আবেগ নিয়ে সংঘের নিজস্ব সমীকরণ। তাই কী এবার নরেন্দ্র মোদি - অমিত শাহদের ভাষা মিশন?