দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মাত্র দিন দশেক আগে সানিয়ার সঙ্গে এনগেজড হন পাইলট সিদ্ধার্থ যাদব। আগামী ২ নভেম্বর তাঁদের বিয়ে ঠিক হওয়ার কথা ছিল। প্রসঙ্গত হরিয়ানার রেওয়ারির বাসিন্দা সিদ্ধার্থ যে জাগুয়ার যুদ্ধবিমানটি চালাচ্ছিলেন, সেটি জামনগর বিমানঘাঁটি থেকে ওড়ার কিছু ক্ষণ পরই যান্ত্রিক ত্রুটির মুখে পড়ে। দুর্ঘটনায় ধ্বস্ত বিমান থেকে নিজেকে বাঁচাতে না পারলেও জীবনের শেষ মুহূর্তে অসম সাহসিকতার পরিচয় দেন ২৮ বছর বয়সি এই পাইলট। তিনি তাঁর সহকর্মী পাইলটকে বিমান থেকে বার করে দেন এবং বিমানটিকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে দূরে সরিয়ে একটি খোলা মাঠের দিকে নিয়ে যান। সেখানেই ভেঙে পড়ে যুদ্ধবিমানটি। নয়তো জনবসতিপূর্ণ এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটলে আরও অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারাতেন।
advertisement
পাইলট সিদ্ধার্থের সহকর্মী মনোজ কুমার সিং আহত হয়েছেন এবং বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সম্প্রতি একটি ছোট্ট ছুটি কাটিয়ে ডিউটিতে ফিরে এসেছিলেন সিদ্ধার্থ। রুটিন বিমান অভিযানে অংশ নিতে গিয়েই তিনি দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। তাদের পাইলটের মৃত্যুর খবর জানিয়ে ভারতীয় বায়ুসেনা লিখেছে: “এই প্রাণহানির জন্য গভীরভাবে শোক প্রকাশ করছে আইএএফ এবং শোকাহত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ নির্ণয়ের জন্য তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী নায়েব সিং সাইনিও তরুণ পাইলটের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, “জামনগরের কাছে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান দুর্ঘটনায় রেওয়ারির মাজরা (ভালখি) গ্রামের ছেলে জাগুয়ার পাইলট সিদ্ধার্থ যাদবের শহিদ হওয়ার প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। হরিয়ানার ভূমিপুত্রের এই আত্মত্যাগ চিরকাল স্মরণীয় থাকবে। এই শোকের মুহূর্তে, আমরা সকলেই পূর্ণ সংবেদনশীলতার সাথে শহিদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছি এবং তাঁর আত্মীয়স্বজনদের প্রতি আমার সম্পূর্ণ সমবেদনা জানাই। ঈশ্বর যেন মৃত আত্মাকে তাঁর ঐশ্বরিক চরণে স্থান দেন।’’
ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে নিহত পাইলট সিদ্ধার্থ যাদবের পরিবারের সম্পর্ক দীর্ঘ দিনের। তাঁর বাবা সুশীল যাদব ভারতীয় বায়ুসেনায় চাকরি করেছিলেন এবং তাঁর ঠাকুরদা এবং প্রপিতামহ সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছিলেন। তিন প্রজন্মের পারিবারিক ধারা অনুসরণ করে সিদ্ধার্থও বায়ুসেনায় যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত ও কর্মজীবনের অনেক কিছুই অধরা রেখে চলে গেলেন গোলাপের পাপড়ি বর্ষণ এবং গানস্যালুটকে সঙ্গী করে।