চেন্নাই: অভিনেতা বিজয়ের জনসভায় মর্মান্তিক কাণ্ড। শনিবার অভিনেতার নিজের প্রতিষ্ঠা করা রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেটরি কাজাগম (টিভিকে)-এর জন সমাবেশে প্রবল হুড়োহুড়ি। পদদলিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে কমপক্ষে ৩৯ জনের। অসুস্থ আরও অসংখ্য ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিত্সাধীন।
advertisement
সূত্রের খবর, ঘটনা নজরে আসতেই বক্তৃতা থামিয়ে দেন বিজয়। অসুস্থদের মধ্যে শিশুরাও ছিল বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্ট্যলিন বলেন,‘এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আমাদের রাজ্যের ইতিহাসে, কখনও কোনও রাজনৈতিক দলের আয়োজিত অনুষ্ঠানে এত বেশি সংখ্যক মানুষ প্রাণ হারাননি। ভবিষ্যতেও যেন এমন দুর্ঘটনা আর কখনও না ঘটে।’ ক্ষতিগ্রস্তদের তিনি ন্যায্য বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন।
এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বিজয় লেখেন, “আমার হৃদয় টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছে। অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টে রয়েছি আমি যা শব্দ দিয়ে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমার ভাই-বোনেরা যারা কারুরে প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।”
গতকাল দুপুরেই কারুরে পৌঁছনোর কথা ছিল টিভিকে-র প্রধান বিজয়ের। কিন্তু তিনি প্রায় ৬ ঘণ্টা দেরিতে পৌঁছন। ততক্ষণে মাত্রাতিরিক্ত ভিড় হয়ে গিয়েছিল। প্রচারের জন্য যে বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেই বাসও এগোতে পারছিল না। বাসের ছাদ থেকেই বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটে।
সূত্রের খবর, কয়েকজন কর্মী পরিস্থিতি লক্ষ্য করে সতর্কতা জারি করেন। তড়িঘড়ি বক্তৃতা থামিয়ে তাঁর প্রচার বাসের উপরে থেকে জলের বোতল ছুঁড়তে থাকেন অভিনেতা তথা রাজনৈতিক নেতা বিজয়। প্রবল ভিড়ের মধ্যে অ্যাম্বলেন্সের অসুস্থদের কাছ পর্যন্ত পৌঁছতেও সমস্যা হয় বলেই জানা গিয়েছে। অজ্ঞান হওয়া ব্যক্তিদের অ্যাম্বুলেন্সে করে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ৩৯ জনের মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়।
তামিলনাড়ুর শাসক দল ডিএমকে অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের দিকই আঙুল তুলেছে। ডিএমকে-র মুখপাত্র সর্বানন আন্নাদুরাই বলেছেন, “এটা অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের ষড়যন্ত্র। বিজয় স্পষ্টভাবে জানিয়েছিল যে একটা নির্দিষ্ট সময়েই অনুষ্ঠান শুরু হবে, কিন্তু তা হয়নি। এত জনতা প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন। ভিড় জমানোর জন্যই এটা করা হয়েছিল। এটা উদ্যোক্তাদের নোংরা পরিকল্পনা। যারাই এর জন্য দায়ী, তাদের গ্রেফতার করতে হবে। মিস্টার বিজয়ও অপরাধী, তিনি নিজেকে নির্দোষ বলতে পারেন না।”