শুক্রবার আগরতলার মহিলা মহাবিদ্যালয়ে গিয়ে সেখানকার ছাত্রীদের সঙ্গে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব৷ তখনই এই অপ্রিয় প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে৷ প্রাথমিক ভাবে ছাত্রীর প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়ে গেলেও তাঁর সঙ্গে সহমত পোষণ করতে বাধ্য হন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন: আদালতে মামলা হতেই অনুব্রতর 'অধিকার' নিয়ে প্রশ্ন ফিরহাদের! কী কারণে রুষ্ট মন্ত্রী?
advertisement
আগরতলার ইন্দ্রনগর এলাকার বাসিন্দা বিদিশা নামে ওই ছাত্রী প্রশ্নোত্তর পর্বের একেবারে শেষ দিকে মাইক্রোফোন হাতে উঠে দাঁড়ান৷ প্রথমেই বিপ্লব দেবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'হয়তো আপনার শুনতে খুব খারাপ লাগবে, কিন্তু এটা খুব সিরিয়াস ইস্যু৷' যা শুনে বিপ্লব দেব বলেন, 'না, না, আপনি বলুন৷'
এর পরই হলভর্তি ছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কার্যত চমকে দিয়ে ওই ছাত্রী বলেন, 'যখন ভোটের সময় বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে গন্ডগোল হয়েছে, তখন কিন্তু বিজেপি-র ছেলেরা বাড়িতে ঢুকে ঢুকে মেয়েদের উপরে অত্যাচার করেছে৷ কাউকে ছাড়েনি, আর এটা নিয়ে কোনও আন্দোলনও হয়নি৷'
আরও পড়ুন: মহিলাদের উপর অত্যাচার হয়েছে, বিপ্লব দেবকে সরাসরি প্রশ্ন কলেজ ছাত্রীর, দেখুন ভিডিও
গত বছর নভেম্বর মাসে ত্রিপুরায় পুরভোট হয়৷ সেই সময়ও এই অত্যাচার চলেছে বলে অভিযোগ করেন বিদিশা৷ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলে চলেন, 'আমার পাড়াতেও গত নভেম্বর মাসে ভোটের সময় হুমকি দেওয়া হয়, যে ভোট দিতে হবে৷ মহিলাদের যদি আমরা এত সুবিধে দেওয়ার কথা বলি, তাঁদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা হয়, চাহলে মহিলাদের উপরে কেন ওরা এই অত্যাচার করতে পারবে? আর কেন ওদের কিছু বলা যাবে না? কেন? কারণ ওরা ধমকি দিচ্ছে এখন বিজেপি-র সরকার চলছে৷ এদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হবে না? এ রকমই যদি চলতে থাকে তাহলে কীভাবে আমাদের দেশের উন্নতি হবে?' বিদিশার বক্তব্য শুনে তাঁর সহপাঠীরাও হাততালি দিয়ে ওঠেন৷
ত্রিপুরায় বার বারই ভোট পরবর্তী হিংসা এবং বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকদের উপরে বিজেপি-র অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে৷ প্রত্যাশিত ভাবেই সেই সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব৷ তৃণমূলের পক্ষ থেকে একই অভিযোগ তোলা হলে পাল্টা পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে কটাক্ষ করেছেন ত্রিপুরার বিজেপি নেতারা৷ কিন্তু শুক্রবার যেভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই রাজ্যের মহিলাদের উপরে অত্যাচার নিয়ে এক ছাত্রী সরব হলেন, তাতে রীতিমতো অস্বস্তিতে ত্রিপুরার বিজেপি নেতৃত্ব৷