”ত্রিপুরায় পণ সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা খুব কম এখন। কিন্তু তবুও আমরা ঝুঁকি নিতে চাই না এবং আমরা চাই যে এই জাতীয় মামলা পুরোপুরি নির্মূল হোক। আমরা চাই না কোনও মহিলা পণ সম্পর্কিত সমস্যার মুখোমুখি হোক। তাই সরকার একাধিক পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করছে।” আগরতলার ৩৩ নং পুর ওয়ার্ডের মহিলা স্বশক্তিকরণ কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত ‘স্বাবলম্বী নারী, স্বাবলম্বী ত্রিপুরা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
advertisement
আরও পড়ুন- দিল্লিবাসীকে বড় উপহার, এই কাজে আর লাগবে না পুলিশের অনুমতি, ঘোষণা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, ”প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মহিলাদের স্বশক্তিকরনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। সংখ্যালঘু অংশের মা বোনেদের কথা চিন্তা করে এবং তাদের সম্মান রক্ষায় তিন তালাক প্রথা বিলুপ্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। মহিলারা হচ্ছেন আমাদের চালিকা শক্তি। সংসারে তাদের একটা বিরাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। আমাদের সমাজের ৫০ শতাংশ হচ্ছেন মহিলা। তাই ঘরের মধ্যে তারা চালিকা শক্তি হলে কেনই বা সমাজে হবেন না? তাদের কথা চিন্তাভাবনায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর দিশায় ত্রিপুরা সরকার কাজ অব্যাহত রেখেছে। আমরা সবসময় নারীদের শক্তির প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করি। রাজ্যে বর্তমান সরকার আসার পর মহিলাদের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। অথচ পূর্বতন সরকার শুধু তাদের মিছিল মিটিংয়ের কাজে ব্যবহার করেছে।”
আরও পড়ুন- আগামী ২৪ ঘণ্টা ছয় রাজ্য কাঁপাবে ভারী বৃষ্টি, ঝড়জল, তুষারপাতে রবি-সোম খেলা দেখাবে
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর ৮ মার্চ দিনটিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আমাদের ডাবল ইঞ্জিন সরকার মহিলাদের অধিকার রক্ষা এবং সম্মান ও সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করে যাচ্ছে। আমরা মহিলাদের স্বশক্তিকরনের কথা বলছি। এর পাশাপাশি তাদের সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে বিশেষ নজর দিয়েছে সরকার। আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের ফলে এখন মহিলারা মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস পাচ্ছেন। শুধু পুরুষদের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। আজ মহিলারা পাইলট হচ্ছেন, মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন, ট্রেন চালাচ্ছেন, গাড়ি চালাচ্ছেন। আগে আমরা যেটা ভাবি নি সেটাই এখন করছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার-সহ সবক্ষেত্রেই মহিলাদের অগ্রগতি প্রত্যক্ষ হচ্ছে। কোনও অবস্থায় পুরুষদের থেকে পিছিয়ে নেই মহিলারা। বরং পাল্লা দিয়ে অনেক ক্ষেত্রে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্য সরকার ত্রিপুরা স্টেট পলিসি ফর এমপাওয়ারমেন্ট অফ ওমেন ২০২২ সালে চালু করেছে। মূলত, মহিলাদের কল্যাণে এটা করা হয়। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে ৫০ শতাংশের উপর অংশীদারিত্ব তাদের দেওয়া হয়েছে। আরবান লোক্যাল বডির নির্বাচনের ক্ষেত্রেও ৫০ শতাংশের উপর আসন দেওয়া হয়। পুর সংস্থার ক্ষেত্রেও সেটা করা হয়েছে।
মানিক সাহা আরও বলেন, মহিলাদের অধিকার রক্ষায় শুধু কথাই নয়, কাজের মাধ্যমেও করে দেখিয়েছি আমরা। মহিলারা এখন আমাদের কর্মসূচিগুলিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিচ্ছেন। যেখানে আগে তারা রেগা কার্ড বাতিলের হুমকির মুখে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাধ্য হতেন। আগে এমএনরেগা থেকে প্রাপ্ত অর্থ মধ্যস্থতাকারীদের দ্বারা সংগ্রহ করা হত। তবে এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রচেষ্টার কারণে মধ্যস্থতাকারীদের সাথে কোনও লিঙ্ক রাখতে হয় না এবং মজুরি সরাসরি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এটাই স্বচ্ছতা। আমাদের সরকারের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। আমরা টিএসআর বাহিনীতে মহিলাদের জন্য ৩৩% রিজার্ভেশন নিশ্চিত করেছি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার চায় নারীরা যাতে গুণমানসম্পন্ন শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। আমরা শুধু আগরতালার কথা ভাবি না। দেখা গেছে আর্থিকভাবে সক্ষম না হওয়ায় অনেক মেয়েকে স্কুল ছাড়তে হয়েছে। এজন্য আমরা ছাত্রীদের জন্য সমস্ত ধরণের ফি মুকুব করার উদ্যোগ নিয়েছি। গন্ডাতুইসায় একটি নতুন ৫০ বেডের ছাত্রী হোস্টেল স্থাপন করা হয়েছে। আমরা সমস্ত জেলায় মহিলা পরিচালিত পুলিশ স্টেশনও গড়ে তুলেছি।