আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলে প্রায় ১২টি মৌ স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সেটা সম্ভব হয়েছে। আজ পুরো উত্তর পূর্বাঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শান্তি যদি না থাকে তবে কোন ভালো কাজ ফলপ্রসূ হত না। ডাঃ সাহা বলেন, ‘স্কিল-উদয় তংনাই’ – এই তিনটি শব্দের মধ্যে বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য খুঁজে পাওয়া যায়। এজন্য স্কিল ডেভেলপমেন্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
advertisement
আরও পড়ুন: মাকে হারিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন কেজরিওয়াল, ১২ বছর পর হিসেব মেলালেন শীলা পুত্র সন্দীপ
ত্রিপুরার নিজস্ব সম্পদকে কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন করা হচ্ছে। রাবারের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর সামগ্রী তৈরি হচ্ছে। কিছুদিন আগে মুম্বাই গিয়ে দেশের প্রখ্যাত শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির সঙ্গে ত্রিপুরায় বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন ত্রিপুরায় টিম পাঠানো হবে। রাবার উৎপাদনে কেরালার পরেই রয়েছে ত্রিপুরা। এসবের উপর ভিত্তি আমাদের রাজ্যে ইন্ডাস্ট্রি হচ্ছে। আর সবকিছুর মধ্যেই স্কিল ডেভেলপমেন্ট রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আলাদা করে এরজন্য মন্ত্রক খুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে আগরের বাণিজ্য এখন এগিয়ে যাচ্ছে। আগে এই আগর ব্যবসার উপর প্রতিবন্ধকতা ছিল। এখন সেটা মধ্যপ্রাচ্যে যাচ্ছে। আগরকে ভিত্তি করে আগামী দিনে ১০ হাজার কোটি টাকার টার্গেট রাখা হয়েছে। আমাদের রাজ্যে চা শিল্প আগে রুগ্ন হয়ে পড়েছিল। অথচ ত্রিপুরার চা গুণমানে কোন অংশে কম ছিল না। বর্তমান সরকার চা শিল্পের মানোন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: ‘এক দশকের কুশাসন থেকে মুক্ত হল দিল্লি’! ঋণ চোকানোর আশ্বাস মোদির
এখানে টি অকশন সেন্টার খোলা হয়েছে। ধীরে ধীরে ত্রিপুরার চায়ের দাম বাড়ছে। চা উৎপাদনে ত্রিপুরা এখন পঞ্চম স্থানে রয়েছে। এই সরকার আসার পর শিল্পের উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিয়েছে। বোধজংনগর রাবার ইন্ডাস্ট্রি থেকে উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী এখন বাইরেও যাচ্ছে। বাংলাদেশেও যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে এখন কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে। আর আমাদের ছাড়াও বাংলাদেশের উন্নয়ন কোনভাবেই সম্ভব নয়। পরবর্তী সময়ে এই পরিস্থিতি শুধরে যাবে। মৈত্রী সেতু নিয়ে আমাদের অনেক আশা আকাঙ্খা রয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হবে সেটা। সবকিছু তৈরি। কিন্তু সময়ের কারণে অপেক্ষা করতে হবে। রেল লাইনে বাংলাদেশের আখাউড়ার সঙ্গে আগরতলার সংযোগ হয়ে গেছে।
এটা চালু করা গেলে আগরতলা থেকে কোলকাতা মাত্র ৭/৮ ঘণ্টা সময় লাগবে। সবদিক দিয়ে উন্নয়নের নিরিখে ত্রিপুরা এখন একটা পারফর্মার স্টেট হিসেবে গন্য হচ্ছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে জিএসডিপির ক্ষেত্রে ত্রিপুরা এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। মাথাপিছু আয়েও ত্রিপুরা এখন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। নর্থ ইস্ট কাউন্সিলের প্ল্যানারি সেশনও সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে ত্রিপুরায়। প্ল্যানারি সেশনে ৮ জন রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীরা এসেছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এসেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ত্রিপুরায় এমন বন্যা পরিস্থিতি আগে কখনো দেখা যায়নি। বগাফায় প্রায় ৬৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। যা কোনদিন ভাবা যায় নি। সেই জায়গায় আমরা ৩/৪ দিনের মধ্যে প্রাথমিক পরিস্থিতি উত্তরণে সক্ষম হয়েছি। আমি নিজে গোটা বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। এর পাশাপাশি গোটা বিষয়টি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবগত করি। এরপরই কেন্দ্রীয় সরকার হেলিকপ্টার থেকে শুরু করে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ টিম সহ যাবতীয় আনুষাঙ্গিক সামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এভাবেই বিপর্যয়কে সামাল দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই শান্তির পরিবেশের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরা আরো এগিয়ে যাক। ত্রিপুরার ছেলেমেয়েদের মধ্যে মেধার কোন অভাব নেই। ত্রিপুরার ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন জায়গায় সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছে। আগামীতে টিআইটিকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যাতে সারা দেশের মানুষ ত্রিপুরাকে চিনে নেয়।