ভোট এগিয়ে আসতেই নিজের কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার সারছেন মানিক সাহা। ব্যাডমিন্টনে তুখোড় ছিলেন। ত্রিপুরায় বিপ্লব যুগের অবসানে, যাবতীয় ঝড় ঝাপটা সামলেছেন তিনিই। দৌঁড়তে অসম্ভব ভালোবাসেন। নিজেই বলেন, পায়ের পাতার গড়ন তাঁকে অ্যাথলিট হিসাবে সুবিধা দিয়েছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী হয়েও সকাল সাতটা থেকে ডোর টু ডোর ক্যাম্পেইন করছেন। আবার দুপুরে কোনও আদিবাসী জনজাতি এলাকায় গিয়ে সভা করছেন।
advertisement
আসলে বিধানসভা ভোটের পিচ তিনিই ভালো বোঝেন, কারণ রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন চালাচ্ছেন। তাঁর হাসিমুখ, কখনও বিরক্ত না হওয়া আর ক্লিন ইমেজ এবার ভরসা বিজেপি শিবিরের। আর তিনি বলছেন, ‘‘ভারতীয় জনতা পার্টি এমন একটা দল যে দল শুধু মানুষের জন্য কাজ করে। উন্নয়নকে অন্যতম অগ্রাধিকার দেয় এই পার্টি। তাই মানুষ এখন অপেক্ষায় রয়েছে ১৬ ফেব্রুয়ারির জন্য। রাজ্যের সবগুলি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীদের জয়ী করে দ্বিতীয় বার বিজেপি সরকার গঠিত হবে।’’
মডেল ত্রিপুরা গঠনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে বর্তমান সরকার। এই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য ত্রিপুরাকে দেশের মধ্যে অন্যতম একটি শ্রেষ্ঠ রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা, নেশা মুক্ত ত্রিপুরা হিসেবে রাজ্যকে দেশের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করা। আর 'এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা' গড়ে তোলার স্বপ্নকে পূরণ করতে তুলতে নতুন ভোটারদের একটা বিশাল ভূমিকা রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এই সরকার বাস্তবিক অর্থে মানুষের সরকার। মানুষের সামগ্রিক কল্যাণে কাজ করাই বর্তমান সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এই সরকার নারী কল্যাণে কাজ করতে বিশ্বাস করে। তাই চাকরি ক্ষেত্রে মহিলাদের ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন স্টল প্রদানে মহিলাদের জন্য ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করা হয়েছে। কলেজগুলিতে মেয়েদের জন্য বিনামূল্যে পঠনপাঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মেয়েদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য রাস্তায় রাস্তায় ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। এজন্য অনেক ক্যামেরা কেনা হয়েছে। এর পাশাপাশি শহর সংলগ্ন এলাকাতেও ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মেয়েদের নিরাপত্তাকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছে সরকার। এছাড়া রাজ্যের সাতটি জেলায় সম্পূর্ণ মহিলা পরিচালিত মহিলা থানা স্থাপন করা হয়েছে। থানাগুলিতে ২৪ ঘন্টা হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে। এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য মহিলাদের আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।"
তিনি বলেন, আগামীতে এই অংশের ভোটারদের উপর নির্ভর করছে রাজ্যের ভবিষ্যৎ। 'এক ত্রিপুরা, শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা' গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদেরও একটা বড় ভূমিকা থাকবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এই সরকার চাইছে নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গঠন করা। আর এজন্য একটা সঠিক প্ল্যাটফর্ম দরকার। বর্তমান সরকারই নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তুলতে অন্যতম সঠিক প্ল্যাটফর্ম। আজকের যুবরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। এরমধ্যে কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ আইএএস, কেউ আইপিএস বা অন্য পেশা বেছে নেবে। মনে রাখতে হবে সমাজের জন্য প্রত্যেকের কিছু করার রয়েছে। অন্যের ভালোর জন্য যেমন কাজ করতে হবে তেমনি দেশের কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে।"
আরও পড়ুন, 'ধনপুর কি নিজের মেয়েকেই চায়?' উত্তর খুঁজছে ত্রিপুরা
আরও পড়ুন, অভিজ্ঞতা থেকে এখনও শিখছেন, প্রার্থী না হয়েও ত্রিপুরার ভোটের ময়দানে তিনিই তারকা
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "ভোট প্রদানের ক্ষেত্রেও ভেবেচিন্তে ভোট দেওয়া প্রয়োজন। এই প্রথম বার নতুন ভোটাররা ভোট প্রদান করবেন। তাই তাদের অমূল্য ভোট প্রদানের আগে চিন্তা ভাবনা করা প্রয়োজন। বর্তমান সরকার এমন একটা সরকার যেটা স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে বিশ্বাসী। আগামীতে ত্রিপুরা মডেল উপহার দেওয়াই এই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য।" ট্যুইটারে তাঁর প্রোফাইল পিকচারে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিচ্ছেন বাঁশ দিয়ে তৈরি লাইট স্ট্যান্ড, যার গড়ন অনেকটা সৈনিকের মতই। ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটে মোদীর সৈনিক মানিকই।