শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ট্রেনের চালককে কটক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই মুহূর্তে তাঁর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। রেলসূত্রে খবর কটকের বাসিন্দা লোকো পাইলট জি এন মোহান্তি এবং ভদ্রকের বাসিন্দা এস্ট লোকো পাইলট বীরেন্দ্র বেহরা উভয়কেই ভুবনেশ্বরের এইমসে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
রেলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছে, “দুর্ঘটনায় জড়িত মালগাড়িটির ইঞ্জিন চালক ও গার্ড অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। ওই কর্মকর্তা নিউজ 18 -কে জানিয়েছেন, আহতদের তালিকায় লোকো পাইলট এবং তার সহকারীর পাশাপাশি করমণ্ডল এক্সপ্রেসের গার্ড এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের গার্ডও রয়েছে।
advertisement
আরও পড়ুন: ‘পদত্যাগ করুন রেলমন্ত্রী…!’ এবার দাবি অন্দরেই! ‘বিজেপি’ নেতার বিস্ফোরক ট্যুইটে তোলপাড়
দক্ষিণ পূর্ব রেলের খড়গপুর ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার রাজেশ কুমার বলেন, “লোকো পাইলট, সহকারী লোকো পাইলট এবং করমণ্ডল এক্সপ্রেসের গার্ড এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসের গার্ডকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ ওড়িশার বালাসোর জেলায় শালিমার-চেন্নাই সেন্ট্রাল করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি লাইনচ্যুত হয়ে যায় এবং একটি ট্রেনের একটি দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষের পরেই এই বীভৎস ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনায়, ১৭টি কোচ লাইনচ্যুত এবং গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, শত শত যাত্রী আটক হয়ে পড়েন। দুর্ঘটনার কারণ জানতে রেলমন্ত্রক উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
এরই মধ্যে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন তদন্তের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা। এতে জানা গিয়েছে, বিধ্বস্ত করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনটি মূল রুটের পরিবর্তে বাহঙ্গা বাজার স্টেশনের ঠিক আগে বিপুল গতিতে ‘লুপ লাইনে’ গিয়ে পরে এবং দাঁড়িয়ে থাকা একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে ভয়ঙ্কর সংঘর্ষ হয় ট্রেনটির।
এই প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট ইঙ্গিত করে যে করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে প্রথমে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছিল, তারপর থামানো হয়। এতে বলা হয়েছে যে ‘সংকেত ট্রেন নম্বর 12841 আপ মেইন লাইনের জন্য পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু ট্রেনটি আপ লুপ লাইনে প্রবেশ করে এবং লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পণ্য ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তীব্র গতিতে ধাবমান ট্রেনটির এবং সেটি তৎক্ষণাৎ লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এদিকে, (ট্রেন নং) 12864 ‘ডাউন মেইন লাইন’ দিয়ে চলে গেলে সেটির দুটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে উল্টে যায়।’
ইতিমধ্যে, রেলওয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন এমন যাত্রীদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা এবং গুরুতর আহতদের জন্য ২ লক্ষ টাকা এবং সামান্য আহতদের জন্য ৫০,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ ও ত্রাণ ঘোষণা করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল (PMNRF) থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মৃতদের নিকটবর্তী আত্মীয়দের প্রত্যেককে অতিরিক্ত ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন। এ ছাড়া আরও অনেক রাজ্যও সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছে।