মুর্শিদাবাদের সালারে বিজয়া সম্মেলনীর মঞ্চ থেকে জেলা ও ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বকে ফের কটাক্ষ হুমায়ুনের। রাজনৈতিক মহলের মতে, হুমায়ুন কবীর আসলে দলকেই বিপাকে ফেলছেন। ভরতপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সালারের এক অনুষ্ঠান বাড়িতে বিজয়া সম্মিলনী সভায় তিনি কার্যত তারই পটভূমিকা তৈরি করলেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ওই সভায় হুমায়ুনকে বলতে শোনা যায়, ২০২৬ সালের মধ্যেই দলের পুরনো নেতাদের ৭৫ শতাংশকে সরিয়ে ভরতপুরে দলের সংগঠনকে নতুন করে সাজাবেন তিনি৷ তাতে জায়গা পাবেন নতুনরাই৷ এই কাজে তাঁকে বাধা দিলে তাঁঁর ফলও ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন হুমায়ুন৷ দলের বিধায়কের এই বক্তব্য নিয়ে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে দলের জেলা নেতৃত্ব৷
advertisement
তৃণমূলের একাংশের নেতারা বলছেন, নানা ইস্যুতে এই মুহূর্তে দল যে কিছুটা রাজনৈতিকভাবে ব্যাকফুটে রয়েছে, তার ফায়দা তোলার জন্য এই ধরনের মন্তব্য করে তৃণমূলের একাংশকে সংগঠিত করতে চাইছেন হুমায়ুন। যদিও হুমায়ুন কবীরের সাফ কথা, 'আমি রাজনীতিতে দীর্ঘদিন রয়েছি। সোজা ব্যাটে খেলাই পছন্দ করি। কিছু নেতার মতো সামনে এক, পিছনে আরেক বলি না। আর তার জন্যই আমি অনেক সময় অনেকের কাছে অপ্রিয় হই।'
আরও পড়ুন: মমতাকে অসম্মান করলে শেষ দেখে ছাড়বেন, শুভেন্দুকে হুঁশিয়ারি দিয়ে হঠাৎ সক্রিয় শোভন
সালারের বিজয়া সম্মিলনী মঞ্চে বিতর্কিত নেতা, প্রাক্তন মন্ত্রী, ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর কার্যত হুমকির সুরেই মুর্শিদাবাদের দলের চেয়ারম্যান, সভানেত্রীর নাম না করে তোপ দেগে বলেন , “যাঁরা আমাদের চেয়ারম্যান, প্রেসিডেন্ট- অন্য জায়গা আলোকিত করে বড় বড় কথা বলছেন আর তাঁদের মদতে যাঁরা আমাকে বড় বড় চ্যালেঞ্জ করছেন, তোমাকে (মুস্তাফিজুর রহমান ওরফে সুমন) বলছি , তোমার গুরুর কাছে একবার ভালো করে খোঁজ নিও। বহরমপুরে একটা তাড়া যেদিন মারব না, সেদিন তোমার গুরুও যাবে, তুমিও যাবে, আর সেও যাবে । আমাদেরকে বেশি পাঙ্গা নেবে না ভাই।'
হুমায়ুন আরও বলেন, “কেউ আমাদের সাথে বেশি পাঙ্গা নিতে আসবেন না । লোহা যত তাতাবেন, হাতুরি ঠুকবেন তত লাল হবে আর তত শক্ত হবে। আমি বলছি হুমায়ুন কবীরের সাথে অনেক রথি মহারথী পাঙ্গা নিয়েছে। প্রয়াত মান্নান হোসেন, প্রয়াত আরও অনেক নেতা, তাঁরা কিন্তু অধীর চৌধুরীকে একেবারে ফিনিশ করতে চেয়েছিল ২০০৫ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। অনেক রথী মহারথী সেদিন অধীর চৌধুরীর সঙ্গে ছিল । আর আজকে তাঁরা তৃণমূলের অনেক বাঘ ভাল্লুক হয়েছে । আমি অধীর চৌধুরীর কাছে ছিলাম । ২০০৫ সাল থেকে ২০১২ সালের ২০ নভেম্বর পর্যন্ত কংগ্রেসের প্রথম একাদশের সদস্য ছিলাম৷ অধীর চৌধুরীর কিচেন রুমের সদস্য ছিলাম। আর আজকে যাঁরা আমাদের ঘাড়ের-মাথার চুল চেপে ধরে নাচছে তাঁরা সেদিনকে তৃতীয় বেঞ্চে বসত”।
এর আগেও পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন হুমায়ুন। তা নিয়েও বিস্তর জলঘোলা হয়। হুমায়ুনের বারবার এমন আচরণ নিয়ে অস্বস্তিতে শাসক দল।