তার পর এ দিনই তৃণমূলের নাম না করেই বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসে ভাঙন ধরানোর জন্য ট্যুইটারে কটাক্ষ ছুড়ে দেন ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল (Bupesh Baghel)৷ কিছুক্ষণের মধ্যেই তার কড়া জবাব দিয়েছে তৃণমূল৷ তবে রাখঢাক নয়, ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর নাম করেই তাঁকে জবাব দিয়েছে তৃণমূল৷ সঙ্গে আমেঠিতে রাহুল গান্ধির (Rahul Gandhi)পরাজয় নিয়েও কংগ্রেসকে বিঁধতে ছাড়ল না তৃণমূল (TMC gives reply to Bhupesh Baghel tweet)৷
advertisement
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র জাগো বাংলার শারদ সংখ্যায় বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মুখ হিসেবে তৃণমূলই যে আসল মুখ, এমন দাবি করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কংগ্রেসের ব্যর্থতার কথাও তুলে ধরেন তিনি৷ গত কয়েকদিন ধরেই জাতীয় স্তরে বিজেপি-র বিকল্প হিসেবে তৃণমূলকেই প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করেছে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল৷ গোয়া, অসম, ত্রিপুরার মতো বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের দলে টানছে তারা৷ কয়েকদিন আগেই গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফেলেইরোকে দলে টেনে কংগ্রেসকে জোরালো ধাক্কা দিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব৷
আরও পড়ুন: বাংলার 'পর্যবেক্ষণে' কৈলাস-মালব্যতেই ভরসা, BJP-র জাতীয় কর্মসমিতিতে বড় চমক!
এ দিন হঠাৎই ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল ট্যুইটারে লেখেন, 'কিছু মানুষ কংগ্রেসের এমন নেতাদের দলে টেনে জাতীয় বিকল্প হওয়ার চেষ্টা করছে, যাঁদের নিজেদের আসনেই জিততে পারেন না এবং চরম হতাশায় ভুগছেন৷ দুর্ভাগ্যজনক ভাবে জাতীয় স্তরে বিকল্প হয়ে উঠতে গেলে তার শিকড় অনেক গভীরে থাকতে হয় এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন৷ কোনও চটজলদি উপায়ে তা সম্ভব নয়৷'
নাম না করলেও ভূপেশ বাঘেলের নিশানায় যে তৃণমূলই ছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ বুধবার রাহুল গান্ধির সঙ্গে লখিমপুর খেরিতেও গিয়েছিলেন বাঘেল৷ তার পরেই তাঁর এই ট্যুইট বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ৷ বাঘেলের ট্যুইটের জবাবে তৃণমূলের তরফেও পাল্টা ট্যুইট করা হয়৷
সেখানে ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলকে আক্রমণ করে লেখা হয়, 'প্রথম বারের একজন মুখ্যমন্ত্রীর থেকে বড় বড় কথা শোনা যাচ্ছে৷ নিজের ওজন না বুঝে কথা বললে সম্মান পাওয়া যায় না৷ হাইকম্যান্ডকে তুষ্ট করার কী বিশ্রী চেষ্টা৷' এর পরেই সরাসরি গত লোকসভা নির্বাচন রাহুল গান্ধির পরাজয়ের প্রসঙ্গ টেনে এনে খোঁচা দিয়ে তৃণমূল লিখেছে, 'আমেঠীতে ঐতিহাসিক পরাজয়ের কথা মুছে দেওয়ার জন্য কি নতুন ট্যুইটার ট্রেন্ড শুরু করল কংগ্রেস?'
জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোট গড়ার লক্ষ্যে হত জুলাই মাসে দিল্লি গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেই সময় সনিয়া গান্ধির বাসভবনে গিয়ে রাহুল গান্ধি এবং কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে দেখা করেন তিনি৷ এর পর কিছুদিন ধরেই দুই দল সমন্বয় রেখেই চলছিল৷ কিন্তু তৃণমূল এবার স্পষ্ট করে দিয়েছে, বিরোধী জোটের নেতৃত্বে কংগ্রেসকে তারা মানবে না৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বারই দাবি করেছেন, বিরোধী জোটের নেতৃত্ব কে দেবে, তা নিয়ে তিনি ভাবছেন না৷
তৃণমূলকে বার্তা দিতে ভবানীপুর উপনির্বাচনেও প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস৷ কিন্তু তার পর থেকেই যেন দুই দলের মধ্যে কোথাও তাল কেটেছে৷ প্রথমে তৃণমূল নেতাদের কটাক্ষ, আক্রমণে মুখ না খুললেও এবার পাল্টা জবাব দিতে শুরু করেছেন কংগ্রেস নেতারা৷ তার পর আজ ভূপেশ বাঘেলের ট্যুইট নিয়ে দুই দলের কথার লড়াই যেভাবে প্রকাশ্যে এলো, এর পর কংগ্রেস- তৃণমূল সম্পর্ক কোন পথে এগোয়, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল৷