গত মঙ্গলবারই যোশীমঠের দুটি বিপজ্জনক হোটেল ভেঙে ফেলার কথা ছিল উত্তরাখণ্ড প্রশাসনের। কিন্তু, এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়ে সেই কাজেই হাত দিতে পারেনি প্রশাসন। আর গতকালের পরে, আজ, বুধবারও সেই একই সমস্যার মুখে দাঁড়িয়ে উত্তরাখণ্ড সরকার।
আরও পড়ুন - চার কিশোর-কিশোরী চোখে স্বপ্ন নিয়ে জাতীয় মঞ্চে তলোয়ার হাতে, সাব জুনিয়র ন্যাশানালে বড় পরীক্ষা
advertisement
স্থানীয় সূত্রের খবর, বিপজ্জনক হোটেল ভাঙতে হোটেলের আশপাশের বাসিন্দাদের বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে। না হলে যে কোনও মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের কোনও দুর্ঘটনা। কিন্তু বাড়ি ছাড়তে চাইছেন না এলাকার বাসিন্দারা। এদিন সকালে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং রাজ্য পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ইঞ্জিনিয়ররা হোটেল বিল্ডিং ভাঙতে গেলে বিপজ্জনক হোটেলের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এদিকে, আবহাওয়াবিদেরা জানাচ্ছেন, আগামী দু-একদিনের মধ্যে ভারী তুষারপাত এবং বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে যোশীমঠে। সে ক্ষেত্রে, নতুন করে কোনও জায়গায় ধসের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। আর অন্যদিকে, সেই একই কারণে মাথার ছাদটুকু হারাতে চাইছেন না এলাকার মানুষ।
বিপজ্জনক বাড়ি খালি করার জন্য ইতিমধ্যে নগদ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে উত্তরাখণ্ডের পুস্কর সিং ধামির সরকার। এছাড়াও, ঘর বাড়ির মূল্যায়ন করার আগেই নগদ এক লক্ষ টাকা করে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বাসিন্দাদের। তাতেও কোনও লাভ হচ্ছে না। এখন আগামিদিনে অথৈ জলে দাঁড়িয়ে গোটা যোশীমঠ শহর।
গত কয়েকমাস ধরেই মাটি বসে যাওয়ার কারণে গোটা যোশীমঠ জুড়ে একাধিক বাড়িতে ফাটল দেখা দিচ্ছিল। গত সপ্তাহে ক্রমশ বাড়তে থাকে ফাটলের সংখ্যা। ফেটে চৌচিড় হয়ে যায় শঙ্করাচার্য মঠ, এমনকি, চিন সীমান্তগামী গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাও। প্রায় ৭০০টি বিপজ্জনক বাড়ি থেকে বাসিন্দাদের অন্যত্র পাঠিয়ে দেয় সরকার। যোশীমঠে গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে আসেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি। উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকে একাধিক নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।
আরও পড়ুন: স্বপ্নের মতো শহরের আয়ু আর মাত্র কটা দিন! ধ্বংসের পিছনে কারণ জানলে অবাক হবেন
যোশীমঠের বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরেরই অদূরে চলা NTPC হাইডেল প্রজেক্টের কারণেই মাটি দ্রুত বসে যেতে শুরু করেছে এই পুণ্য শহরে। পাহাড়ে একের পর এক বিস্ফোরণ, টানেল বোরিং মেশিনের কম্পন পরিস্থিতি দ্রুত সঙ্কটজনক করে তুলেছে। যদিও ঘটনার দায় নিতে অস্বীকার করছেন NTPC কর্তৃপক্ষ।
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছর ধরেই ২.৫ ইঞ্চি করে বসে যাচ্ছে যোশীমঠ ও তার সংলগ্ন এলাকা। এই প্রাকৃতিক ঘটনাকে আরও ত্বরান্বিত করেছে আরও নানা ঘটনা। এর মধ্যে যোশীমঠে উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা না থাকাকেও দায়ী করা হয়েছে। দায়ী করা হচ্ছে বিশ্ব উষ্ণায়নকেও।