দুবাইয়ের এয়ার শোয়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি চালাচ্ছিলেন ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার নমংশ সিয়াল৷ হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলার বাসিন্দা৷ বয়স মাত্র ৩৪ বছর৷ যুদ্ধবিমান চালানোর বিষয়ে অত্যন্ত পারদর্শী৷ তাঁর শান্ত ধীর ব্যক্তিত্ব পছন্দ করতেন সবাই৷ তাঁর ভগ্নিপতি জানাচ্ছেন, নমংশ একজন সুশৃঙ্খল, নম্র এবং জাতির প্রতি নিবেদিত প্রাণ একজিন ব্যক্তি ছিলেন৷ সিয়ালের স্ত্রীও একজন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা৷ তাঁদের একটি ছয় বছরের মেয়েও রয়েছে।
advertisement
তাঁর শ্যালক, রমেশ কুমার বলেন, ‘‘আমার শ্যালক ছিল… ওঁর পদোন্নতি হওয়ার কথা ছিল। মাত্র ৩৪ বছর বয়সেই সে স্কোয়াড্রন লিডার পদে পৌঁছে গিয়েছিল। খুবই বিনয়ী মানুষ ছিল। এমন ঘটনায় পুরো গ্রাম বিধ্বস্ত।’’
গত শুক্রবার স্থানীয় সময় ২টা বেজে ৮ মিনিট নাগাদ আন্তর্জাতিক দর্শকদের সামনে এরিয়াল শো দেখানোর সময় হঠাৎ করেই ধোঁয়া বেরতে শুরু করে তেজস বিমানটির পিছন থেকে৷
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, একটি লুপে ওড়ানোর জন্য বিমানটি উপরের দিকে বেশ খানিকটা সোজা উড়িয়েছিলেন, তারপর উল্টোনো একটা পজিশনে নিয়ে নামতে শুরু করে৷ এমন পরিস্থিতি সাধারণ বিমানটি ফের উল্টে উঠতে শুরু করে লুপ সম্পূর্ণ করার জন্য৷
কিন্তু, এক্ষেত্রে, বিমানটি আর উপরের দিকে উঠতে পারেনি, অর্থাৎ, অল্টিটিউড গেইন করতে পারেনি৷ এরপরে সেকেন্ডের মধ্যে পিছন থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে হতে বিমানটি মাটিতে আছড়ে পড়ে৷
বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ফুটেজ দেখে যতদূর বোঝা যাচ্ছে, বিমানচালক ‘ব্যারেল রোল’ প্রদর্শন করছিলেন৷ যেখানে চালককে ৩৬০ ডিগ্রি ঘূর্ণন সম্পূর্ণ করতে খুব কম সময়ের জন্য ‘আপ সাইড ডাউন’ অবস্থায় চালাতে হয়৷
যাঁরা বিমান ওড়ান, তাঁদের কাছে এই কারসাজি দেখানো খুব একটা জটিল বিষয় নয়৷ তবে, এক্ষেত্রে স্পিড, অল্টিটিউড সব কিছুর ঠিকঠাক ক্যালকুলেশন করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ এখানে সামান্য ‘মিস জাজমেন্ট’ মারাত্মক ঘটনা ঘটিয়ে ফেলতে পারে৷ এখানে ভুল শুধরে নেওয়ার কোনও জায়গা থাকে না৷
বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক ধারণা, বিমানটি যথেষ্ট উচ্চতায় ছিল না, কিংবা ‘ইনভার্সন রিট্রিভ’ করার মতো স্পিড তুলতে পারেনি বিমানটি৷
উইং কম্যান্ডার নমন স্যালের মৃত্যুর খবর পৌঁছনো মাত্রই শোকের ছায়া নেমেছে হিমাচল প্রদেশে৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু বলেছেন, ‘দুবাই এয়ার শোতে তেজস বিমান দুর্ঘটনায় হিমাচল প্রদেশের কাংড়া জেলার সাহসী পুত্র নমন সিয়াল জির মৃত্যুর খবর অত্যন্ত হৃদয়বিদারক। আমরা একজন সাহসী, কর্তব্যনিষ্ঠ এবং সাহসী পাইলটকে হারালাম৷’
