সুপ্রিম কোর্টের একজন প্রাক্তন বিচারপতি এবং অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারের নজরদারিতে বিকাশ দুবের এনকাউন্টার কাণ্ডের তদন্তের বিষয়ে রাজি হয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকার৷ কিন্তু গ্রেফতারের আগে দীর্ঘদিন ধরে একের পর এক গুরুতর অভিযোগ মাথায় নিয়েও কীভাবে মুক্ত ছিল বিকাশ, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে শীর্ষ আদালত৷ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি তলব করেছে শীর্ষ আদালত৷
advertisement
উত্তর প্রদেশ সরকারের হয়ে এই মামলায় শীর্ষ আদালতে সওয়াল করছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা৷ তাঁর উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, 'এতগুলি অপরাধের অভিযোগ নিয়ে কীভাবে একজন ব্যক্তি জামিনে মুক্ত থাকতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত আট জন পুলিশকর্মীকে হত্যা করে, তা ভেবেই আমরা বিস্মিত! এটা গোটা ব্যবস্থারই ব্যর্থতা৷ বিকাশ দুবের বিরুদ্ধে সব মামলায় কী কী নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য আমাদেরকে দিন৷'
ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি বলেন, 'একটি রাজ্যের দায়িত্বই হল আইনের শাসনকে সুনিশ্চিত করা৷ আর আইনের শাসনের শর্তই হল গ্রেফতার, বিচার এবং সাজা দান করা৷ আমরা বুঝতে পারছি যে আপনারা যুক্তি দেবেন এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত পুলিশের কর্তৃত্বকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল৷ কিন্তু রাজ্যের দায়িত্ব হল আইনের শাসনকে প্রতিষ্ঠিত করা৷'
বিকাশ দুবের এনকাউন্টার নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবং তার সঙ্গে রাজনৈতিক নেতা এবং পুলিশ কর্তাদের একাংশের যোগসাজশের অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টে একগুচ্ছ মামলা দায়ের হয়৷ তার পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, উত্তর প্রদেশ সরকার এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য যে কমিটি তৈরি করেছে, তা নতুন করে গঠন করতে হবে৷ এতদিন ওই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি৷
আদালতের এই নির্দেশ মেনে নিয়ে তুষার মেহতা জানান, আগামী বুধবারই নতুন কমিটির জন্য সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এবং প্রাক্তন পুলিশ অফিসারের নাম শীর্ষ আদালতে জমা দেওয়া হবে৷ তার পরই সম্ভবত এই মামলার রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট৷
পিইউসিএল নামে একটি এনজিও-র তরফে সিনিয়র আইনজীবী সঞ্জয় পারিখ আদালতকে জানান, বিকাশ দুবের আগে ৪০টি এনকাউন্টারের ঘটনা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা৷ একই সঙ্গে উত্তর প্রদেশে পুলিশের এনকাউন্টার প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং উপমুখ্যমন্ত্রী সাম্প্রতিক অতীতে যে মন্তব্যগুলি করেছেন, সেদিকেও আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ওই আইনজীবী৷
এর পরই সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'যদি দেখা যায় যে মুখ্যমন্ত্রী, উপমুখ্যমন্ত্রীরা কিছু বলার পর পরই সেরকম কিছু ঘটছে, তাহলে বিষয়টি আপনাদের খতিয়ে দেখা উচিত৷' আগামী বুধবার ফের এই মামলার শুনানি হবে৷