advertisement
আজকের ঐতিহাসিক রায়ে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে সমাজে বসবাসকারী প্রত্যেকটি মানুষের মৌলিক অধিকার রয়েছে ও সংবিধান সর্বদাই ব্যক্তি পরিচয় ও ব্যক্তি স্বাধীনতাকেই গুরুত্ব দিয়ে এসেছে । সামাজিক বৈষম্য ও কুসংস্কারের শিকার হয়ে এসেছেন সমকামি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ যা কখনোই কাম্য নয়। সংবিধান কোনওদিনই সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষদের মতাদর্শ মেনে চলেনি তাই তাঁদের মতাদর্শ কোনওভাবেই নৈতিকতার সংজ্ঞা নির্ধারণ করবে না । সম্মতিসূচক ভাবে দুটি মানুষ শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলে সেখানে আইনি কোনও বাধা থাকে না । এছাড়াও দুজন সমলিঙ্গের মানুষ যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে তাকে অপ্রাকৃতিক আখ্যা দেওয়া সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ।দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পূর্ণ সম্মতি নিয়ে একে অপরের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে তা 'অসাংবিধানিক' বা অনৈতিক নয় । এছাড়াও, সমকামি মানুষদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করলে তা তাদের মৌলিক অধিকারকে লঙ্ঘন করে ।
এর সঙ্গে চিরাচরিত ধ্যাণ ধারণার পরিবর্তন করার কথা বলেছেন প্রধান বিচারপতি । প্রত্যেকটি মানুষের উচিৎ প্রগতিশীলতার আওতায় আসা ।
ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৭ ধারা অনুযাইয়ী সমকামিতা বা দুটি সমকামি মানুষের মধ্যে যৌন সম্পর্ক আইনসম্মত ছিল না। এমনকী ১০ বছরের কারাদন্ডও হতে পারত । ১৯৯৪ সালে প্রথমবার এই আইনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল দায়ের করা হয়েছিল । এরপর দায়ের হয়েছে একাধিক জনস্বার্থ মামলা । ২০০৯ সালে দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছিল দুটি সমকামি মানুষ সম্মতিক্রমে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলে তা একান্তই তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয় । কিন্তু এই রায়কে ২০১৩সালে রায়কে খারিজ করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট ৩৭৭ ধারার পক্ষেই রায় দিয়েছিল। যদিও এরপর ব্যক্তি পরিসরের অধিকারকে আইনি স্বীকৃতি দেয় সুপ্রিম কোর্ট । সেখানেই বলা হয়েছিল নানাবিধ যৌন বৈশিষ্ট সম্বলিত মানুষদেরও ব্যক্তি স্বাধীনতা রয়েছে।