সুদীপ রায় বর্মন এবং তাঁর অনুগামী কয়েকজন বিধায়কের তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে৷ কয়েকদিন আগেই কলকাতায় এসে সুদীপ রায় বর্মন সহ ত্রিপুরার কয়েকজন বিজেপি বিধায়ক বৈঠকও করে গিয়েছেন বলে খবর৷ সুদীপ রায় বর্মনের সঙ্গে বিপ্লব দেবের সংঘাত অনেকদিনের৷ সুদীপকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দিয়েছিলেন বিপ্লব৷ এর পরই সংঘাত চরমে ওঠে৷
advertisement
ত্রিপুরায় দলের মধ্যে এই দ্বন্দ্বের সুযোগ যে তৃণমূল নেওয়ার চেষ্টা করছে, সে সম্পর্কে যথেষ্টই ওয়াকিবহল বিজেপি নেতৃত্ব৷ ত্রিপুরায় মন্ত্রিসভার রদবদলের আগে সোমবার তড়িঘড়ি আগরতলা পৌঁছন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দিলীপ সাইকিয়া, উত্তর পূর্বের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত জোনাল সেক্রেটারি অজয় জামওয়াল, ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বিনোদ সোনকার এবং অসম ও ত্রিপুরার দায়িত্বে থাকা আর এক নেতা ফণীন্দ্র নাথ শর্মা৷ সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় এই নেতাদের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠকের মাঝপথেই বেরিয়ে যান সুদীপ রায় বর্মন৷ ফলে, তাঁর সঙ্গে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের মতবিরোধের জল্পনাও ছড়িয়েছে৷
এ দিন বিভিন্ন পর্যায়ে ত্রিপুরার মন্ত্রী, বিধায়ক এবং সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় বিজেপি-র দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা৷ মন্ত্রী, সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক হয়৷ সেই বৈঠক শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই বেরিয়ে যান সুদীপ৷ পারিবারিক কারণেই তাঁকে বৈঠক ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি৷ যদিও সুদীপের বৈঠক ছেড়ে চলে যাওয়ার নেপথ্যে অন্য কারণ দেখছে রাজনৈতিক মহল৷ কারণ বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নিজের এবং অনুগামীদের মন্ত্রিসভায় ফেরানোর দাবি তুলেছিলেন সুদীপ৷ এমন কি, পরবর্তী সময়ে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীও করা হতে পারে বিজেপি-র একটি সূত্রেই দাবি করা হচ্ছিল৷ যদিও এ দিন এই দুই দাবি বা সম্ভাবনার কোনওটিই বাস্তবায়িত হয়নি৷ অদূর ভবিষ্যতে সুদীপের দাবি মানা হবে, এমন আশ্বাসও সম্ভবত দলের তরফে পাননি বিক্ষুব্ধ এই বিধায়ক৷ সেই কারণেই তিনি বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন কি না, তা নিয়েও ত্রিপুরার রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে৷
এ দিনই আগরতলায় নিজের অনুগামী প্রায় দু' হাজার নেতা কর্মীকে নিয়ে আলাদা বৈঠক করেন সুদীপ রায় বর্মন৷ সেখানে বেশ কয়েকজন বিজেপি বিধায়কও উপস্থিত ছিলেন৷ বৈঠকের পর বিপ্লব দেব সরকারকে কার্যত নিশানা করে সুদীপ বলেন, 'কোনও সরকার দাবি করতে পারে না যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক আছে৷ আইনশৃঙ্খলার উন্নতির জন্য
সরকারকে অনুরোধ করব৷ হামলা- হুজ্জতি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন৷' প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় তাদের নেতা, কর্মীদের উপর বিজেপি একের পর এক হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল৷ কার্যত সেই একই সুরে অভিযোগ করে বিপ্লব দেব সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়ালেন সুদীপ রায় বর্মন৷ শুধু তাই নয়, বিজেপি বিধায়ক আরও অভিযোগ করেন, দল এবং সরকার বিজেপি-র নেতা কর্মীদের কথা শুনছে না৷
বিজেপি সূত্রে খবর, মঙ্গলবরাই বিপ্লব দেব সরকারের মন্ত্রিসভায় রদবদল হতে চলেছে৷ জানা গিয়েছে, রামপ্রসাদ পাল, ভগবান দাস এবং সুশান্ত চৌধুরী- এই তিন বিধায়ককে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে৷