TRENDING:

Success Story: ১২ বছরে বিয়ে, সাত সন্তানের মা বাউয়া দেবী, হারিয়ে যাননি সংসারের লড়াইতে, প্রতিকূলতা পেরিয়ে পদ্মশ্রী বাউয়া দেবীর

Last Updated:

শিল্প আর সংসার দুই সামলিয়েছেন হাসিমুখে, পদ্মশ্রী বাউয়া দেবীর জীবনের কথা নানা রঙে সাজানো এক ছবির পট

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
নয়াদিল্লি:  শিল্পজগতে নারীর অবদান তুলনামূলকভাবে কম। অনেকেরই কথাটা খারাপ লাগাতে পারে। কিন্তু যেভাবে পুরুষশিল্পীদের নাম লোকের মুখে ফেরে, সেভাবে নারী শিল্পীদের কথা উঠে আসে না। এর কারণ একদিকে যদি হয় প্রচারের অভাব, অন্য দিকে তাহলে জীবনসংগ্রাম। এ কাল হোক বা সে কাল, নারীর কাজ সংসারে কখনই কম হয় না। সেই সব সামলে তাকে মন দিতে হয় অন্য কিছুতে। দেশের নানা রাজ্যে নারীরা সফলভাবে বস্ত্রশিল্পের ধারাবাহিকতায় তাঁত বুনে চলেন, শোলার মুকুট, ডাকের সাজ বানান, পটের ছবি আঁকেন, পুতুল গড়েন। সবার নাম প্রচারের আলোয় আসে না। পদ্মশ্রী বাউয়া দেবীর স্বীকৃতি এবার হয়তো তাঁদের আলো দেবে।
পদ্মশ্রী বাউয়া দেবীর জীবনকথা
পদ্মশ্রী বাউয়া দেবীর জীবনকথা
advertisement

পদ্মশ্রী বাউয়া দেবীর জীবনকথা

পদ্মশ্রী বাউয়া দেবীর গল্প খুবই অনুপ্রেরণামূলক। ১২ বছর বয়সে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা জিত্বরপুরে থাকেন, যা কালা গ্রাম নামে পরিচিত। বাউয়া দেবী ছোটবেলা থেকেই মিথিলা পটের ছবি আঁকতেন। সেই সময় তাঁর কাছে ছবি আঁকার জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ ছিল না, টেবিল-চেয়ার বা রঙের তুলিও ছিল না। তিনি তিসির ডাঁটা দিয়ে তুলি, ফুল ও পাতা দিয়ে প্রাকৃতিক রঙ তৈরি করতেন। মিথিলায় বছরে ১৪-১৫টি উৎসব হত, যেমন বট সাবিত্রী পূজা, যেখানে অরিপান তৈরি এবং দেয়ালে ছবি আঁকার ঐতিহ্য ছিল। তাঁর শাশুড়ি এবং দিদিমা তাঁকে এই শিল্পকলা শিখিয়েছিলেন। বাউয়া দেবী তাকেই সম্পদ করে নেন, তা এগিয়ে নিয়ে যেতে শুরু করেন।

advertisement

আরও পড়ুন – India Strikes Pakistan Scared: ভারতীয় মিসাইল এত্ত ভয়, শুধু স্ট্র্যাটেজির কারণে নয়, ভয়ে কাঁপতেই কাঁপতেই বাঙ্কারে পাক সেনাপ্রধান মুনির

প্রথমদিকে, ঘরের কাজ শেষ করে, তিনি তাঁর সন্তানকে কোলে নিয়ে ছবি আঁকা শিখতে যেতেন। একদিকে, সন্তানের যত্ন নেওয়া, অন্য দিকে, রান্না করা এবং ঘর দেখাশোনা করা, এই সবকিছুর মাঝেও, তিনি ছবি আঁকা চালিয়ে যান। খুব অল্প বয়সেই তিনি রাজ্য পুরস্কার পেয়েছিলেন। যদিও সেই সময় শিল্পীর সংসার ছিল অভাবে ভরা। পটনায় রাজ্য পুরস্কার পাওয়ার পর তিনি জাতীয় পুরস্কারও পান। সেই সময়, তিনি তাঁর ২ বছরের সন্তানকে সঙ্গে করে পুরস্কার আনতে গিয়েছিলেন।

advertisement

পদ্মশ্রী বাউয়া দেবীর সাত সন্তান রয়েছে। তাঁর পাঁচ মেয়ে এবং দুই ছেলের সকলেই মিথিলা চিত্রকলার ক্ষেত্রে সক্রিয়। ছেলে অন্য কোনও দেশে চিত্রকলার প্রচার করছেন, তো মেয়েরা এই শিল্পে দক্ষ হয়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাস করছেন। মিথিলা চিত্রকলার পতাকা উড়ে চলেছে তাঁদের তুলির টানে। বাউয়া দেবী বলেন যে অল্প বয়সেই তাঁর বিয়ে হয়েছিল এক জমিদার পরিবারে। স্বামী কোনও কাজ করতেন না; তাঁর একমাত্র কাজ ছিল পৈতৃক জমি এবং পুকুরের দেখাশোনা করা। কিন্তু তিনি বাড়ি ছেড়ে চিত্রকলার ক্ষেত্রে নিজের জন্য একটি নাম তৈরি করেছিলেন। শুধু ছবি আঁকাই নয়, সেই ছবির সঙ্গে বাউয়া দেবী রামায়ণের গল্প, উৎসব, রাজা-রানিদের নিয়ে গান গাওয়ার জন্যও পরিচিত। তিনি ছবি আঁকায় যতটা দক্ষ, গান গাওয়ার ক্ষেত্রেও ততটাই দক্ষ।

advertisement

শিল্পও তাঁকে সম্পদ দিয়েছে দুহাত উজাড় করে। বাউয়া দেবী বলেন যে চিত্রকলার মাধ্যমেই তিনি পুরনো জমি বিক্রি করে পাঁচটি জায়গায় বাড়ি তৈরি করেছেন এবং দিল্লিতে একটি পাঁচতলা ভবন তৈরি করেছেন। বিভিন্ন রাজ্যে জমি কিনে বাড়ি তৈরি করেছেন তিনি। এছাড়াও, তিনি তাঁর পাঁচ মেয়ের বিয়ে দেন, তাঁর দুই ছেলেকে সুশিক্ষা দেন এবং বিভিন্ন জায়গায় তাঁদের সুন্দর জীবনযাপনের ব্যবস্থাও করেন। সবটাই হয় এই ছবি এঁকে! আজও অক্লান্ত ভাবে কাজ করছেন বাউয়া দেবী, তিনি চান তরুণ তরুণীরা এই ক্ষেত্রে এগিয়ে আসুন এবং এই শিল্পকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যান।

advertisement

পদ্মশ্রী বাউয়া দেবী লোকাল 18-এর সঙ্গে কথোপকথনের সময়ে বলেন, আমি জাপানে ১১ বার, ফ্রান্সে ২ বার, জার্মানিতে ২ বার, স্পেনে বেশ কয়েকবার, শিকাগো, লন্ডন এবং আমেরিকায় বেশ কয়েকবার গিয়েছি এবং এক বছর ধরে সেখানে থেকেছি। আমি ভারতের প্রতিটি কোণে গিয়ে শিক্ষা দিয়েছি এবং সম্মানিতও হয়েছি। আজও এই বয়সে আমি একটি চিত্রকলা ইনস্টিটিউটে শিল্প শিক্ষক হিসেবে কাজ করছি।

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

মিথিলা চিত্রকলার ক্ষেত্রে পদ্মশ্রী বাউয়া দেবী কত পুরস্কার পেয়েছেন তা গুনে বলা কঠিন। এখনও পর্যন্ত তিনি প্রায় পুরো দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং অনেক পুরষ্কার পেয়েছেন। খুব অল্প বয়সেই, তিনি পটনায় রাজ্য পুরস্কার এবং ১৫০০ টাকা পেয়েছিলেন। এরপর, যখন তাঁর সন্তানের বয়স ২ বছর, তিনি দিল্লি যান। ১৯৮৫ সালে এক হাতে সন্তান এবং অন্য হাতে জাতীয় পুরস্কার নিয়ে ফিরে আসেন। এছাড়াও, ২০১৭ সালে তিনি পদ্মশ্রীতে ভূষিত হন। চিত্রকলার ক্ষেত্রে তিনি অনেক জায়গা থেকে পুরষ্কার পেয়েছেন, কিন্তু পদ্মশ্রীর তাঁকে দিয়েছে নতুন তাৎপর্য। সেই আলো অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করে বইকি!

বাংলা খবর/ খবর/দেশ/
Success Story: ১২ বছরে বিয়ে, সাত সন্তানের মা বাউয়া দেবী, হারিয়ে যাননি সংসারের লড়াইতে, প্রতিকূলতা পেরিয়ে পদ্মশ্রী বাউয়া দেবীর
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল