শেরপা পাওয়া গেলে সোমবার দুপুর পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালানো হবে ৷ তাতে দেহ নামানো সম্ভব না হলে সরকারি ভাবে উদ্ধার অভিযান বন্ধের কথা ঘোষণা করবে এসপিসিসি-র কর্তারা ৷
সে ক্ষেত্রে এভারেস্টের কোলেই রয়ে যাবে পরেশ নাথ ও গৌতম ঘোষের দেহ। কারণ সরকারিভাবে রবিবার থেকেই এ মরসুমের জন্য এভারেস্ট অভিযান শেষ। ফলে রুট বন্ধ থাকবে আগামী ছ-মাস। এভারেস্টে আবহাওয়া খারাপ থাকায় তাঁদের দেহ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবুও এদিন রাজ্য সরকারের এই প্রচেষ্টার পর নতুন করে আশায় বুক বেঁধেছেন পরেশ নাথ ও গৌতমের পরিবার ৷
advertisement
এদিনও খারাপ আবহাওয়ার জন্য লুকলা বিমানবন্দরে বার বার চক্কর খায় কপ্টার। কিন্তু উড়তে ব্যর্থ হয়। এই কারণেই প্রায় ৮ হাজার মিটার উচ্চতা থেকে দুই বাঙালি অভিযাত্রীর দেহ নামিয়ে আনতে পারলেন না অভিজ্ঞ শেরপারা। এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে মৃত পর্বতারোহী সুভাষ পালের দেহ এদিন নামিয়ে আনা হয় কাঠমান্ডুতে । মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পর কাঠমান্ডু থেকে দেহ কলকাতায় আনা হবে।
শুক্রবার দেহের খোঁজ মিললেও শনিবার দেহ নামাতে বাধ সাধল, বৃষ্টি আর প্রবল তুষারঝড়। বহু চেষ্টা করেও এভারেস্টের বিপদসঙ্কুল পথ থেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হল না দুই বাঙালি অভিযাত্রী পরেশ নাথ এবং গৌতম ঘোষের দেহ। রবিবার সকাল আবহাওয়া খানিক উন্নতি ঘটলেও ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই নামে বৃষ্টি ৷ উদ্ধারকারী দলের প্রধান শেরপা শানু জানান, উপরের আবহাওয়া আরও খারাপ ৷
শনিবার থেকে সরকারিভাবে এ মরসুমের এভারেস্ট অভিযান বন্ধ হওয়ার কথা তবু একদিনের জন্য তা বাড়ানো হয় ৷ তাতেও দেহ উদ্ধার সম্ভব না হওয়ায় রাজ্য সরকারের অনুরোধে আরও হাফ বেলা অভিযান চালানোর অনুমতি দেয় এসপিসিসি ৷ সাগরমাতা পলিউশন কন্ট্রোল কমিটির তরফে তা ঘোষণা হয়েছে, এভারেস্টের ট্রাই অ্যাঙ্গেল ফেজে রয়েছে গৌতম ঘোষের দেহ ৷ কিন্তু সবচেয়ে বড় বাধা আবহাওয়া ৷
ব্যালকনির নিচে ফিক্সড রোপের সঙ্গে তাঁর দেহ বেঁধে রাখা হয়েছে ৷ অন্যদিকে, সাউথ কলে মিলেছে পরেশ নাথের দেহ৷ দেহ নামিয়ে ক্যাম্প ৪-এর কাছে একটি তাঁবুর মধ্যে প্যাকিং করে রাখা হয়েছে ৷ গৌতমের দেহ রয়েছে ক্যাম্প ৪-এর উপরেই ৷ ক্যাম্প ৪-এর উচ্চতা প্রায় ৮,৭৪০ মিটার ৷ প্রচণ্ড হাওয়া ও তুষারপাতের জেরে ক্যাম্প ২ থেকে আর এগোতে পারেনি উদ্ধারকারী দল ৷
এভারেস্ট অভিযান সেরে শনিবার দেবরাজ, সুনীতারা বাড়ি ফিরেছেন। তাঁদের সহ অভিযাত্রী পরেশ নাথ ও গৌতম ঘোষ যে বাড়ি ফিরছেন না, তা আগেই নিশ্চিত ছিল। কিন্তু, আপাতত তাঁদের দেহ উদ্ধারের সম্ভাবনাও অতি ক্ষীণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রবিবার ছিল এভারেস্ট দিবস। প্রতি বছর এদিনই শেষ হয় এ মরশুমের এভারেস্ট অভিযান। আবহাওয়ার প্রতিকূলতার জন্য দুই পর্বতারোহীর দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
পর্বতারোহী সুভাষ পালের দেহ ছিল ক্যাম্প ২-এ। তাঁর দেহ রবিবার উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। লুকলা থেকে চপার উড়ে যায় ক্যাম্প ২-এর উদ্দেশে। সুভাষের দেহ ছিল জুনিভার্স স্টেপ-এ।
লুকলা হয়ে সুভাষের দেহ পৌঁছয় কাঠমান্ডু। সেখানেই ময়নাতদন্ত হবে। রাজ্য সরকারের তরফে তত্ত্বাবধানে রয়েছেন ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ সচিব সৈয়দ আহমেদ বাবা। মঙ্গলবার কলকাতায় আনা হবে সুভাষ পালের দেহ। এভারেস্ট অভিযান আবার শুরু হবে মার্চের মাঝামাঝি। সোমবারের পর আবার আট মাস বাদে ফের অভিযান শুরু হলেও পরেশ ও গৌতমের দেহ উদ্ধারের সম্ভাবনা ক্ষীণ। এভারেস্ট দিবসে তার কোলেই সম্ভবত চিরদিনের জন্য আশ্রয় নিলেন দুই পর্বতপ্রেমী।