পাঠানকোটে হামলার পর অনেকটা একই কায়দায় জঙ্গিরা এদিন হামলা চালায় উরিতে ৷ কারণ জঙ্গিরা হামলার জন্য ভোরে সেনাদের ডিউটি বদলের সময়টাকেই এখন বেছে নিচ্ছে ৷ পাঠানকোটেও সেনা পোশাকে এই সেনাদের ডিউটি বদলের সময়েই বিমানঘাঁটিতে ঢুকে পড়েছিল জঙ্গির দল ৷ এদিন ভোররাতেই উরির সেনা ঘাঁটিতে ঢুকে পড়ে চার জঙ্গি ৷ ঘুমন্ত সেনাদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোঁড়ে তারা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রাণ হারান সেনারা ৷ এই হামলার পিছনে আইএসআই মদতের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না ৷ আইএসআইয়ের মদতে লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গিরাই উরি সেনাঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে বলে অনুমান সেনাবাহিনীর ৷ পাঠানকোটের সময় সেনা গাড়ি অপহরণ করে সেনা ঘাঁটিতে ঢুকে পড়ে জঙ্গিরা ৷ সেনা পোষাকে থাকায় তাদের প্রথমে বোঝা সম্ভব হয়নি ৷ যদিও এইভাবে সেনা গাড়ি অপহরণ করে বিমানঘাঁটিতে ঢুকে পড়ার বিষয়টা সহজেই মাফ করার মতো বিষয় নয় ৷ কারণ এক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর দুর্বলতার দিকটাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গিয়েছিল জঙ্গিরা ৷ কিন্তু ওই ঘটনার পরও যে সেভাবে সেনাবাহিনী সতর্কতা অবলম্বন করেনি তা উরির জঙ্গি হামলার ঘটনাই প্রমাণ ৷ কাশ্মীরের এই সেনাঘাঁটিতে ঢোকার ক্ষেত্রে স্থানীয় মানুষের সাহায্যকেই জঙ্গিরা কাজে লাগিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ৷ কারণ সীমান্তরেখা অতিক্রম করে এদেশে ঢোকার ক্ষেত্রে সেখানকার কিছু স্থানীয় মানুষ, যাদের এই জঙ্গিদের প্রতি সহানুভূতি রয়েছে, তাদের অবদান ছাড়া এই কাজ অসম্ভব বলেই মনে করছে সেনাবাহিনী ৷ পাঠানকোটের সঙ্গে উরির হামলার আরও একটা মিল হল এই দুই হামলাই ফিদাঁয়ে জঙ্গি হামলা ৷ মাত্র ৪-৫ জঙ্গি মিলেই কখনও বিমানঘাঁটি আবার কখনও সেনাঘাঁটিতে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে চলে যাচ্ছে ৷
advertisement
কিন্তু পাক সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর জঙ্গিদের এই একের পর এক হামলার পর সেনার তরফে এখন কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেটাই দেখার ৷ কারণ এই পরিস্থিতিতে ভারতের কাছে রাস্তা দুটোই ৷ এক, আক্রমণের পর সেনাবাহিনীরও জঙ্গি নিকেশে অল-আউট ঝাঁপানো ৷ শুধু দু’দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে পারস্পরিক বৈঠকই নয় ৷ প্রয়োজন সেনার তরফে জঙ্গি হামলার সঠিক জবাব দেওয়ার ৷ অন্যদিকে নিজেদের ঘাঁটিগুলিকে আরও সুরক্ষিত করার পাশাপাশি সেনাদের ডিউটির সময় বদলের বিষয়টাকেও আরও জোর দিয়ে দেখার ৷ যাতে ভবিষ্যতে এই দুর্বলতার সুয়গ নিয়ে আরও বড় হামলা পুনরায় না ঘটাতে পারে জঙ্গিরা ৷