পাহাড়ে অভিযান চালানোর জন্য বিখ্যাত ছিলেন তিনি। মাউন্ট এভারেস্ট, কাঞ্চনজঙ্ঘা এমনকি আল্পস পর্বতমালাতেও অভিযান চালিয়েছিলেন তিনি। বিদেশি পর্যটকদের সাহায্য করতেন। এরকমই একটি অভিযানের সময় এক জার্মান পর্বতারোহীর সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। বছরটা ১৯৮১। ওই জার্মান বন্ধুর কাছে উত্তর কাশ্মীরের ম্যাপ দেখে চমকে গিয়েছিলেন নরেন্দ্র কুমার। ম্যাপে স্পষ্ট ছিল উত্তর কাশ্মীরের যতটা অংশ ভারত নিজেদের বলে মনে করে, তার থেকে বেশি অংশ পাকিস্তানের দখলে। সেনাবাহিনীর কাছে ব্যাপারটা জানানোর পর পরিষ্কার হয় আমেরিকান সাহায্যে পাকিস্তান কারাকোরাম সহ সিয়াচেন এবং আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পাহাড়চূড়া দখল করতে মরিয়া।
advertisement
এরপর থেকে নরেন্দ্র কুমার বহুবার অভিযাত্রীদের নিয়ে ওই পথে পাড়ি দেন। পাকিস্তানি সেনার নজরেও পড়ে যান। কিন্তু টুরিস্ট গাইড বলে প্রতিপক্ষকে ভারতীয় সেনার মতলব ধরতে দেননি। আসলে ওই এলাকায় পাকিস্তান কতটা তৎপর সেই খবর সংগ্রহ করাই ছিল তাঁর কাজ। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির সঙ্গে আলোচনার পর সেনাবাহিনী সিয়াচেন ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়। নরেন্দ্র কুমার, মেজর
কুলকার্নির নেতৃত্বে অপারেশন মেঘদুত শুরু করে ভারত। সালতোরো রেঞ্জ দখল করে নেয় ভারত। এই রেঞ্জ থেকে গোটা সিয়াচেন নিজেদের দখলে রাখতে পারে ভারতীয় সেনা। পশ্চিমে পাকিস্তান, পূর্বে চিন।
পাকিস্তান সিয়াচিন হামলা চালানোর প্রায় মাসখানেক আগেই ভারত দখল নিয়ে নেয় গোটা এলাকার। পুরোটাই সম্ভব হয়েছিল নরেন্দ্র কুমারের তৎপরতা এবং বুদ্ধির জন্য। তাঁর সম্মানে সিয়াচেনে ভারতীয় সেনা কুমার বেস নামক একটি বেসক্যাম্প স্থাপন করে। কীর্তি চক্র ছাড়াও,পরম বিশিষ্ট সেবা পদক, পদ্মশ্রী, অর্জুন পুরস্কার এবং ম্যাক গ্রেগর পদক জেতার নজির রয়েছে তাঁর। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে তিনি কর্নেল হলেও অভিযাত্রী এবং সিয়াচেন হিমবাহের জরিপকারী হিসেবেই বিখ্যাত।