লক্ষ্মণ সিং৷ কোটার বাসিন্দা৷ শাহদল শহর থেকে তাঁর গ্রামের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার৷ দীর্ঘদিন ধরেই সিকল সেল অ্যানিমিয়ায় ভুগছিল তাঁর মেয়ে মাধুরী৷ সম্প্রতি সে এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়ে যে, তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়৷ কিন্তু, তাতেও শেষরক্ষা হয়নি৷ গত সোমবার রাতে হাসপাতালে মৃত্যু হয় বছর তেরোর সেই কিশোরীর৷
advertisement
লক্ষ্ণণ সিং জানান, মেয়ের মৃত্যুর পরে কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি৷ তারপর ভাবেন, কীভাবে তিনি মেয়ের মরদেহ তাঁর ৭০ কিলোমিটার দূরের গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাবেন৷
এমন অবস্থায়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চান লক্ষ্মণ৷ অভিযোগ, তাঁকে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, হাসপাতাল থেকে ১৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের বাইরে অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার নিয়ম নেই৷ যা ব্যবস্থা করার তাঁদেরই করতে হবে৷
কিন্তু, অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করার মতো পয়সা লক্ষ্মণের ছিল না৷ সেই কারণে এক পরিচিতের মোটরবাইকের পিছনে মেয়ের মৃতদেহ কোলে নিয়েই রওনা দেন লক্ষ্মণ৷
জানান, গ্রাম থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে তাঁর গাড়ি আটকান শাহদলের কালেক্টর বন্দনা বৈদ্য৷ সেই সময় উনিও গ্রামের দিকেই যাচ্ছিলেন৷ এই ভয়ঙ্কর অবস্থা দেখে তিনিই মৃতদেহ গ্রামে পৌঁছে দেওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করেন৷
আরও পড়ুন: নীল ফরাশের উপরে সার সার সাদা তাঁবু, অভিষেকের নবজোয়ার যাত্রায় নজর কাড়ছে এই ছাউনিতলা
গোটা ঘটনায় তদন্তে নির্দেশ দিয়েছেন শাহদলের কালেক্টর৷ লক্ষ্মণ সিংয-এর পরিবারকে কিছু আর্থিক সাহায্যও করেছেন তিনি৷
কদিন আগেই খানিক এমনই ঘটনার সাক্ষী হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ৷ পাঁচ মাসের মৃত সন্তানকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য মেলেনি অ্যাম্বুল্যান্স৷ বাধ্য হয়ে মৃত শিশুকে ব্যাগে ভরে বাসে করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলেন কালিয়াগঞ্জের বাসিন্দা অসীম দেবশর্মা৷
রবিবারের সেই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়৷ সরকারের তীব্র সমালোচনায় সরব হন বিরোধীরাও৷ ট্যুইট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী৷ অস্বস্তি এড়াতে অবশ্য পরে কড়া পদক্ষেপ করে নবান্ন৷