কৃষ্ণ কুমার বলেন, “একবার বাড়িতে বসে বসে মাকে দেশের কয়েকটা বিখ্যাত মন্দিরের কথা জিজ্ঞাসা করছিলাম৷ তো মা বলল, আরে, আমি তো এই পাশের পাড়ার মন্দিরেই যাইনি৷ এত দূরের মন্দিরে কী করে যাব৷ মায়ের ওই কথাটা শুনে সেদিন খুব মন খারাপ হয়েছিল৷ তাই ঠিক করলাম, মাকে দেশের সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ মঠ এবং মন্দিরের দর্শন করাব৷’’
advertisement
২০১৮ সাল পর্যন্ত কৃষ্ণ কুমার বেঙ্গালুরুর একটি বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করতেন। মাকে নিয়ে দেশজোড়া তীর্থভ্রমণে বেরনোর জন্য সেই চাকরিও ছেড়ে দেন তিনি৷ বছর কুড়ি আগে একটি স্কুটার কিনেছিলেন কৃষ্ণের বাবা৷ কৃষ্ণ বড় হওয়ার পরে তাঁকেই সেই স্কুটারটি উপহারে দিয়ে দেন তিনি৷ এখন বাবার দেওয়া সেই স্কুটারে করেই মাকে নিয়ে তীর্থভ্রমণ করেন কৃষ্ণ৷ বাবার স্কুটারে বসে কোথাও যেন মনে হয়, তিনি ওঁদের সঙ্গে সঙ্গেই রয়েছেন৷
কৃষ্ণ কুমার জানান, তাঁর বাবা ২০১৫ সালে মারা গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘বাবাই আমায় এই স্কুটারটা দিয়েছিল। এখন যখন মাকে স্কুটারে করে নিয়ে যাই, তখন মনে হয় বাবাও আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। আমরা দুজন তীর্থ দর্শন করছি না, আমরা তিনজনে মিলে তীর্থদর্শন করছি৷’’ এখনও পর্যন্ত কৃষ্ণ কুমার দেশের ৬৬ হাজার ৭২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন ওই স্কুটারেই।
কৃষ্ণ কুমারের মা রত্না চুড়া বলেন, ‘‘আমি আমার স্বামীর সঙ্গে জীবনে কোনও ধর্মীয় স্থানে যেতে পারিনি। আমার পুরো জীবনটাই কেটেছে ঘরের কাজে। তাই ছেলে সিদ্ধান্ত নিল যে ও আমাকে ভারতের সমস্ত মন্দিরের দর্শন করাতে নিয়ে যাবে। তারপর থেকে আমরা দেশের বিভিন্ন জায়গার মন্দিরে যাচ্ছি। আমার ছেলে শ্রবণ কুমারের মতো।’’ রত্না জানান, তিনি সমস্ত ছেলেদেরই একটা বার্তা দিতে চান৷ তিনি চান, সবাই যেন বৃদ্ধ বয়সে তাঁদের বাবা-মাকে নিজেদের সঙ্গে রাখে এবং তাঁদের ইচ্ছা পূরণ করে।