এদিকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় এক চাঞ্চল্যকর দাবি সামনে আনলেন খোদ নীনা। জঙ্গলের মধ্যে সন্তানদের সঠিক লালন-পালন হয়নি বলে যে দাবি উঠেছে, তা নস্যাৎ করে দিয়েছেন ওই মহিলা। নীনা বলেন যে, ‘‘আমরা সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই বসবাস করেছিলেন। আমরা তো খিদেতে মরেও যাচ্ছিলাম না। সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে একহাত নিয়ে তিনি আরও জানান যে, তাঁর কন্যারা সম্পূর্ণ সুস্থ এবং আনন্দেই রয়েছে। আর গুহায় থাকাকালীন আমি ওদের খুব ভাল ভাবে দেখভালও করেছি।’’
advertisement
নীনা কুটিনা আরও বলেন যে, “এমনিতে প্রকৃতির কাছাকাছি জঙ্গলের মধ্যে বসবাসের অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে। আমরা কেউ খিদেয় মরে যাচ্ছিলাম না। আর না খাইয়ে রাখার জন্য তো আর আমি আমার সন্তানদের জঙ্গলে নিয়ে যাইনি। ওরা আনন্দেই রয়েছে। ঝরনার জলে স্নান করত ওরা। আর গুহায় ওদের ঘুমোনোর জায়গাটাও খুব সুন্দর। আমরা গুহার গায়ে খুব ভাল চিত্র এঁকেছিলাম। একাধিক মাড হাউজও বানিয়েছিলাম। ছবি এঁকেছি, পুষ্টিকর সুস্বাদু খাবার খেয়েছি। আমার সন্তানদের কোনও কিছুর অভাব ছিল না। ওদের কাছে ভাল জামাকাপড়ও ছিল। সেখানে ভাল ভাবে পড়াশোনাও করেছে। কখনওই না খেয়ে থাকেনি। আপনারা যা শুনেছেন, তা সত্য নয়।”
আরও পড়ুন– এখনই ফাঁসি হচ্ছে না নিমিশা প্রিয়ার ! ইয়েমেনে ভারতীয় নার্সের মৃত্যুদণ্ড স্থগিত
নীনা আরও বলেন যে, “উদ্ধার করার পরে পুলিশ প্রথমে আমার কন্যাদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। ওদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা হয়েছে। আর ওরা ভালই আছে। তারা কখনওই অসুস্থ হয়ে পড়েনি।” গুহায় থাকার প্রসঙ্গে নীনার বক্তব্য, “জায়গাটা খুব সুন্দর। গ্রামের খুব কাছেই এর অবস্থান। এটা কোনও বিপজ্জনক জঙ্গলের মাঝে নয়। গুহার ভিতরে একটি জানলাও রয়েছে। যেখান দিয়ে সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। জায়গাটি একেবারেই বিপজ্জনক নয়। সেখান দিয়ে প্রতি তিন মিনিটে কোনও না কোনও পর্যটক যাতায়াত করতেন। তবে হ্যাঁ, আমরা বহুবার সাপ দেখেছি।”
ভিসা জট নিয়ে বক্তব্য:
নীনা স্বীকার করে নিয়ে জানান যে, তাঁর ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে। ভারতে অবৈধ ভাবে বসবাস করার প্রশ্নে তিনি স্পষ্ট করে জানান যে, “এটা সঠিক নয়। পুলিশ আমাদের পুরনো পাসপোর্ট পেয়েছে। ওরা তদন্ত না করেই সব কিছু ভেবে নিয়েছে। হ্যাঁ! আমাদের ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু ২০১৭ সালের পরে আমরা চারটি অন্য দেশে ভ্রমণ করে ভারতে এসেছিলাম।”
পুত্রের মৃত্যু:
নীনা জানান যে, তাঁর পুত্রের মৃত্যু হয়েছে। সেই কারণে দীর্ঘ সময় ধরে তাঁকে ভারতে থাকতে হয়েছে। ভারতীয় আধ্যাত্মিকতা প্রসঙ্গে নীনার কথায়, “আধ্যাত্মিকতার কারণে আমি ভারতে বসবাস করছি না। আমরা প্রকৃতিকে ভালবাসি, কারণ প্রকৃতিই আমাদের সুস্থ রাখে।” এখানেই শেষ নয়, আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনে নীনা দাবি করেন যে, বিগত ১৫ বছর ধরে রাশিয়ার বাইরে রয়েছেন তিনি। আমি অধিকাংশ সময়ই কাটিয়েছি কোস্টা রিকা, মালয়েশিয়া, বালি, নেপাল এবং ইউক্রেনে। মনে করা হচ্ছে যে, তাঁর কন্যাসন্তানরা ভারতের বাইরেই জন্মেছে। তবে সন্তানদের বাবার বিষয়ে পুলিশকে কোনও রকম তথ্য দিতে চাননি নীনা।