মীরাটের বহ্মপুর এলাকার মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা শীতল এলাকার ব্যাঙ্কে ২০১৫ সালে জনধন অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন ৷ শীতলের এই অ্যাকাউন্টে ছিল মাত্র ৬০০ টাকা ৷ একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন শীতল ৷ ১৮ ডিসেম্বর শীতল যখন এটিএমে নিজের অ্যাকাউন্ট দেখতে গিয়েছিলেন, তখন দেখেন তাঁর অ্যাকাউন্টে রয়েছে ৯৯ কোটি ৯৯ লক্ষ টাকা ৷ এই ঘটনার পরই শীতল যোগাযোগ করেন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে ও আয়কর বিভাগে ৷
advertisement
গোয়া থেকে চন্ডিগড়। বেঙ্গালুরু থেকে দিল্লি। দেশজুড়ে কালো টাকা উদ্ধারে চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে আয়কর বিভাগ, অপরাধদমন শাখা। বিমানবন্দরে তল্লাশিতে বসেছে বডি স্ক্যানার। কিন্তু তাতেও কি আটকানো যাচ্ছে সবটা? দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রচুর সংখ্যক নতুন ও পুরোন নোট। অঙ্কটাও চমকে দেওয়া মত।
কালো টাকা উদ্ধারে আট-ই নভেম্বর মোদির নোট বাতিলের ঘোষণার পর কেটে গেছে দেড় মাস। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট থেকে ইনকাম ট্যাক্স, সিবিআই, দুর্নীতিদমন শাখা একযোগে অভিযান চালাচ্ছে দেশ জুড়ে। কখনও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আধিকারিক, কখনও ব্যবসায়ী, কখনও হাওয়ালা কারবারির কাছ থেকে উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি হিসাব বহির্ভূত টাকা। বুধবারও দেশজুড়ে আয়কর বিভাগ ও সিবিআই-র তল্লাশিতে উদ্ধার করা হয়েছে প্রচুর নগদ টাকা।
৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের পর থেকে তল্লাশি চালিয়ে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোটি কোটি হিসাব বহির্ভূত টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে আয়কর বিভাগ ৷ বাজেয়াপ্ত করা টাকা ২,০০০, ১,০০০ ও ৫০০ টাকার নোটে পাওয়া গিয়েছে৷
কস্টম বিভাগ সম্প্রতি নয়াদিল্লির ইন্দিরা গান্ধি ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দর থেকে ৫৩ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে ৷ সমস্ত টাকাটি নতুন ২০০০ ও ৫০০ টাকার নোটে ছিল ৷ পাশাপাশি ৪,২৯,০০০ টাকার পুরনো নোটও পাওয়া গিয়েছে ৷
এক নাইজেরিয়ান ব্যক্তির কাছ থেকে এই নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে ৷ তামিলনাড়ু কোয়মবট্টুর যাওয়ার কথা ছিল ধৃতের ৷ কস্টম বিভাগের আধিকারিকরা তাকে টাকা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি কোনও সঠিক উত্তর দিতে পারেনি ৷
এর আগে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির এক ব্যবসায়ী রুপচাঁদ প্রসাদের বাড়িতে হানা দেয় ৷
হায়দরাবাদের ক্যাব চালকের অ্যাকাউন্ট থেকে মিলেছে ৭ কোটি টাকা ৷ জিজ্ঞাসাবাদের পর ক্যাব ড্রাইভার প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনার মাধ্যমে ট্যাক্স জমা দিতে রাজি হয়েছেন ৷
বিহারের মুজ্জাফরপুরে বাড়ির পরিচারক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৩ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছে ৷ দুই ব্যবসায়ী তাদের পরিচারকের কোটাক মহিন্দ্রা ব্যাঙ্কে চারটি অ্যাকাউন্ট খুলে তাতে এই টাকা জমা দেয় ৷
মহারাষ্ট্রে ১১ জন দেড় কোটি টাকার সঙ্গে ধড়া পড়েন ৷ অভিযুক্তদের মধ্যে রাষ্ট্রবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতাও ছিল ৷
আয়কর বিভাগের সূত্রের খবর, নোট বাতিলের পর ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩৫৯০ কোটি টাকার বেশি অঘোষিত আয়ের সন্ধান পেয়েছে ৷ এর মধ্যে ৫০৫ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে যার মধ্যে ৯৩ কোটি টাকা নতুন নোটে পাওয়া গিয়েছে ৷