গত ২ জুন ওড়িশার বালাসোরের কাছে বাহানগা বাজার স্টেশনে একটি মালগাড়ির পিছনে ধাক্কা মেরে লাইনচ্যুত হয় চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস৷ উল্টো দিক থেকে আসা বেঙ্গালুরু হাওড়া হমসফর এক্সপ্রেসও দুর্ঘটনার কবলে পড়ে৷ এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২৯৫ জন যাত্রী, আহত হন ১৭৬ জন৷ দুর্ঘটনার পর থেকেই এর কারণ ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছিল৷ কারণ রেল লাইনে পয়েন্টে গোলমালের জেরেই মেন লাইন থেকে পাশের লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে মালগাড়ির পিছনে ধাক্কা মেরেছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস৷
advertisement
আরও পড়ুন: ২১-শে জুলাই কেড়ে নিল প্রাণ! তৃণমূল কর্মীদের নিয়ে উল্টে গেল বাস! ভয়াবহ অবস্থা!
দুর্ঘটনার পরই তার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি৷ অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব উঠে আসায় আলাদা তদন্তের ভার দেওয়া হয় সিবিআই-কে৷ প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট আসার পরই সূত্র মারফত জানা গিয়েছিল, মানুষের ভুলই এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী৷
শুক্রবার সংসদে এই সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তরেই রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের রিপোর্ট পেশ করা হয়৷ সেই রিপোর্ট উল্লেখ করেই রেল মন্ত্রী জানান, বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে একটি লেভেল ক্রসিংয়ের রেল গেট পরিবর্তনের কাজ করতে গিয়েই তার সঙ্গে সংযুক্ত সিগন্যালিং ব্যবস্থার সার্কিটে অদল বদল হয়ে যায়৷
রেল মন্ত্রী রিপোর্ট উল্লেখ করে বলেন, এই ভুলের কারণে ট্রেন নম্বর ১২৮৪১ (করমণ্ডল এক্সপ্রেস) কে মেন লাইন দিয়ে যাওয়ার জন্য সবুজ সিগন্যাল দেওয়া ছিল৷ কিন্তু যে মেন লাইন ধরে করমণ্ডল এক্সপ্রেস ছুটে আসছিল, ১৭ এ/বি ক্রসওভারের কাছে তার পয়েন্ট সেট করা ছিল আপ লুপ লাইনের দিকে৷ যার ফলে করমণ্ডল এক্সপ্রেস মেন লাইন ছেড়ে লুপ লাইনে ঢুকে পড়ে মালগাড়ির পিছনে ধাক্কা মারে৷
রেলমন্ত্রী আরও জানান, গত পাঁচ বছরে এমন ভুল সিগন্যাল দেওয়ার ১৩টি ঘটনা ঘটেছে৷ যার ফলে সাতটি ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটেছে৷
রাজ্যসভায় পেশ করা রেলমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, গত ১৮ জুলাই পর্যন্ত ওড়িশার এই রেল দুর্ঘটনায় মৃত ২৯৫ জনের মধ্যে ২৫৪ জনের দেহ শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে৷ বাকি ৪১ জনের মৃতদেহ দেহ এখনও ওড়িশার ভুবনেশ্বরের এইমস হাসপাতালে পড়ে রয়েছে৷ পাশাপাশি এই মৃতদেহগুলির ডিএনএ নম্ুনা বিশ্লেষণের জন্য নয়াদিল্লির সিএফএসএল-এ পাঠানো হয়েছে৷ ইতিমধ্যেই এই দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে তিন জন রেলকর্মীকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই৷ দক্ষিণ পূর্ব রেলের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্তাকেও বদলি করা হয়েছে৷