তবে মুদ্রাস্ফীতিতে তার কোনও প্রভাব পড়বে কিনা তা আগাম বলা মুশকিল বলে অভিমত রঘুরাম রাজনের। দেশে লগ্নি বাড়তে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসাবে শেষ মনিটারি পলিসিতে রেপো রেট ও ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও অপরিবর্তিত রাখলেন রঘুরাম রাজন। তবে আগামী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে দেশ জুড়ে পণ্য পরিষেবা কর চালুর যে লক্ষ্য সরকার নিয়েছে, তা চ্যালেঞ্জিং বলেই মনে করছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গর্ভনর ৷
advertisement
সোমবার রাতেই সর্বসম্মতিক্রমে লোকসভায় পাশ হয় জিএসটি সংশোধনী বিল ৷ এক দশকের প্রচেষ্টা, আলাপ আলোচনা তর্ক বিতর্কের পর বাদল অধিবেশনে পাশ হয় পণ্য পরিষেবা সংশোধনী বিল ৷ সোমবার লোকসভায় উপস্থিত ৪৪৩ জন সাংসদই জিএসটি-র পক্ষে ভোট দেন ৷
সংসদে জিএসটি নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘গ্রাহকই রাজা, এটাই জিএসটি-র বার্তা ৷’ সেই গ্রাহকের সুবিধার্থেই দেশ জুড়ে অভিন্ন কর নীতি চালু করতে চায় কেন্দ্র ৷
লোকসভায় বিল পাশ হয়ে যাবার পর এবার তা রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হবে। পার্লামেন্টে পাশ হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ১৬ টি রাজ্যের অনুমোদন পেলেই আইন হতে আর কোনও বাধা থাকবে না GST বিলের সামনে ৷
রাজ্যগুলিকে বিক্রয়কর বাবদ প্রাপ্য মিটিয়ে দেবে কেন্দ্র যাতে তারা আর্থিক ক্ষতির মুখে না পড়ে। তবে বিল পাশ মানে পরের দিন থেকেই অভিন্ন করব্যবস্থা কার্যকর হবে, তা নয়। অর্থবছরের গোড়ায় চালু হতে পারে পণ্য পরিষেবা। অথবা তা কার্যকর করা যেতে পারে যে কোনও মাস থেকেই। তবে GST পাশ মোদি সরকারের একটি বড় সাফল্য ৷
ক্রেতাকে একটি পণ্য কিনতে বা পরিষেবা নিতে বর্তমানে একাধিক ট্যাক্স বা কর দিতে হয়। পরিষেবা কর, উৎপাদন শুল্কের মতো কিছু কর নেয় কেন্দ্র। রাজ্যগুলি নেয় সেলস ট্যাক্স, লাক্সারি ট্যাক্স, ভ্যাটের মতো কর। আলাদাভাবে না নিয়ে, এক ছাতার তলায় সব করকে আনতেই গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স বা পণ্য ও পরিষেবা করের জন্ম। অর্থাৎ, ক্রেতা একটি পণ্য কিনলে বা পরিষেবা নিতে চাইলে যে একটিমাত্র কর দেবেন, সেটাই জিএসটি।
অর্থনীতিবিদের একটা বড় অংশের মতে, জিএসটি চালু হওয়ার পর লাভবান হবে দেশের অর্থনীতি। উপকৃত হবেন সাধারণ মানুষও। জিএসটির সুবিধা হল করফাঁকি রোধ, কমবে করের হার, কমবে কর ব্যবস্থার জটিলতাও, ব্যবসা-বাণিজ্যের সরলীকরণ, বাড়বে জাতীয় আয় ৷ এদিন RBI-এর বিদায়ী গর্ভনর রঘুরাম রাজনের গলাতেও শোনা গেল একই সুর ৷