নয়াদিল্লি: আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনকে সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদি সরকার এবার ঐতিহাসিক প্রশাসনিক সংস্কারের পথে হাঁটতে চলেছে বলেই খবর। সেই পদক্ষেপের স্পষ্ট বার্তা মিলেছে নতুন বিলের ঘোষণায়। কেন্দ্র ভারতীয় সংবিধানের ১৩১তম সংশোধনী বিল আনতে চলেছে, যা পাস হলে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড়ের প্রশাসনে বড়সড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। বহুদিন ধরে ঝুলে থাকা কাঠামোগত সংশোধন অবশেষে বাস্তবায়নের পথে এগোতে পারে। যদিও কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, বিষয়টি এখনই চূড়ান্ত নয়।
advertisement
বস্তুত কেন্দ্রীয় সরকার সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০-এর অধীনে চণ্ডীগড়কে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর জন্য সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে সংবিধানের ১৩১ তম সংশোধনী বিল পেশ করা হবে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হল চণ্ডীগড়ের প্রশাসনকে অন্যান্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে একীভূত করা।
লোকসভা সচিবালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই বিলের উদ্দেশ্য হল চণ্ডীগড়কে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০-এর অন্তর্ভুক্ত করা। এই পদক্ষেপের ফলে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, লাক্ষাদ্বীপ, দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ এবং পুদুচেরির মতো কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সমতুল্য হবে চণ্ডীগড়। বর্তমানে পঞ্জাব ও হরিয়ানার যৌথ রাজধানী চণ্ডীগড়ের প্রশাসন পঞ্জাবের রাজ্যপালের দ্বারা পরিচালিত হয়।
স্বাধীন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (UT) হয়েও চণ্ডীগড়ের শাসন কাঠামো অন্যান্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলদের মতো নয়। এই অদ্ভুত প্রশাসনিক কাঠামো বহু বছর ধরে সমালোচনার মুখে। এবার কেন্দ্রের উদ্যোগে পরিস্থিতির বদল আসতে চলেছে। বিলটি পাস হলে চণ্ডীগড় সংবিধানের ২৪০ অনুচ্ছেদের অন্তর্ভুক্ত হবে, যার ফলে অন্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোর মতো এখানেও নিযুক্ত হবেন স্বাধীন প্রশাসক (Administrator) রাজ্যপাল নন।
সরকারি সূত্রের দাবি, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে চণ্ডীগড়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থা আরও স্বচ্ছ, দ্রুত কার্যকরী এবং লক্ষ্যনির্ভর হবে। বর্তমানে পঞ্জাব রাজ্যপাল একই সঙ্গে পাঞ্জাব ও চণ্ডীগড়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলান, যা বহু নীতিগত সিদ্ধান্তে জটিলতা তৈরি করে। সংশোধনী বিল পাস হলে প্রশাসনিক তদারকি, দফতর, নীতি প্রয়োগ এবং নিরাপত্তা কাঠামো আরও কেন্দ্রীভূত ও নিয়ন্ত্রিত হবে।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান এই প্রস্তাবটিকে ভয়াবহ অবিচার বলে অভিহিত করেছেন এবং বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন যে, তারা পঞ্জাবের রাজধানী চণ্ডীগড় ছিনিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেছেন, চণ্ডীগড় “পাঞ্জাবের, ছিল এবং চিরকাল থাকবে” এবং রাজ্য এই সংশোধনী পাস হতে দেবে না। মান আরও দাবি করেছেন যে, পঞ্জাব, পিতৃস্থান হিসেবে, একমাত্র তার রাজধানীর অধিকারী এবং বারবার কেন্দ্রের অবিচারের শিকার হয়েছে।
