বর্ধমানের আউশগ্রাম। শাল-সেগুনের ঘন জঙ্গলে ঘেরা কালিকাপুর। বসতি এখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সেই জঙ্গলের মাঝেই জমিদারবাড়ি। তার সামনে বিশাল নাটমন্দির। সাড়ে তিনশো বছর আগে এখানেই দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন বর্ধমান রাজার দেওয়ান পরমানন্দ রায়।
চারদিন নয়। কালিকাপুর জমিদারবাড়িতে পুজো চলে এক পক্ষকাল ধরে। মহালয়ার দিন থেকেই শুরু হয়ে যায় পুজো। নিষ্ঠা অটুট থাকলেও আর্থিক অনটনের কারণে জমিদার পরিবারের এই পুজোয় সেই পুরাতনি জৌলুস আর জাকজমকে টান পড়েছে। আগে দেবীর নৈবদ্য সাজানো হতো সোনা ও রুপোর থালায়। জমিদারি বিলোপের সঙ্গে সঙ্গে সে রেওয়াজও গেছে।
advertisement
কালিকাপুর জমিদারবাড়ির পুজোর অন্যতম আকর্ষণই ছিল তোপধ্বনি। পুজোর কদিন লালদিঘির পাড়ে কামান দাগা হতো। সেই কামানের শব্ধ শুনে হতো ছাগবলি। কিন্তু বর্তমানে সেই ঐতিহ্যেও ছেদ পড়েছে।
জমিদার বাড়ির এই পুজোতে একসময় নাটমন্দির আলোকিত হত বিশাল বিশাল ঝাড়বাতিতে। পুজোর ক’দিন নিয়ম করে বসত কবিগানের আসর। কলকাতা থেকে আসতো যাত্রাদল। এখনও সেসব না থাকলেও জমিরদার পরিবারের সদস্যরাই মেতে ওঠেন নাটক-গানে। ফের প্রাণ ফিরে পায় কালিকাপুরে রায়েদের ঠাকুরদালান।
