সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ঘিরে বিতর্কের আবহে মোদি এই মন্তব্য করেন। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব একটি চেয়ারের পাশে আম্বেদকরের ছবি রেখে তাতে পা তুলেছেন। যদিও তিনি লালুর নাম সরাসরি বলেননি, তবুও মোদির কটাক্ষ ছিল সোজাসুজি আরজেডি ও কংগ্রেসের দিকে।
advertisement
তিনি বলেন, “আরজেডি ও কংগ্রেসের নেতারা দেশের সংবিধানের রচয়িতার ছবি তাঁদের পায়ের কাছে রাখেন। আমি তাঁর ছবি হৃদয়ের কাছাকাছি রাখি।” এরপর তিনি যোগ করেন, “আরজেডি কখনও ক্ষমা চাইবে না, কারণ ওদের মধ্যে দলিত ও পিছিয়ে পড়াদের জন্য কোনও শ্রদ্ধাবোধ নেই।”
সিওয়ানে জনসভা থেকে মোদি বলেন, “বিহারের মানুষ এই অপমান কোনওদিন ভুলবে না। তারা উপযুক্ত জবাব দেবে।”
সারা বক্তব্যে মোদী বারবার “পঞ্জা” (কংগ্রেস) ও “হারিকেন” (আরজেডি)-র নির্বাচনী প্রতীকের উল্লেখ করে তাঁদের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতি করার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, “আমাদের সংবিধান বলে – ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’। আর ওরা বলে – ‘পরিবারের সাথে, পরিবারের বিকাশ’। এটা-ই ওদের রাজনীতির সারাংশ। বাবাসাহেব এমন রাজনীতির বিরুদ্ধে ছিলেন।”
মোদি বিরোধীদের বিহারের উন্নয়নের পথে বাধা হিসেবেও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আরজেডি ও কংগ্রেসের কার্যকলাপ বিহার বিরোধী এবং বিনিয়োগ বিরোধী। যেখানে ওরা উন্নয়নের কথা বলে, সেখানেই দোকান, শিল্প, ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়… ওরা দুর্নীতি, গুণ্ডারাজ, মাফিয়ার রাজনীতির পৃষ্ঠপোষক।”
এই আম্বেদকর বিতর্ক ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক উত্তাপ চড়িয়েছে। এমন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর বিহার সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। সম্প্রতি জাতীয় তফসিলি জাতি কমিশন রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে ওই ঘটনায় নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে ১৫ দিনের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে। এই চিঠির ফলে যাদব পরিবারকে ঘিরে চাপ আরও বেড়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাত ধরে বিহারে ৫৯০০ কোটির উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন
শুধু রাজনৈতিক বক্তব্যেই নয়, এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদি সিওয়ান জেলায় একসঙ্গে ২৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনা করেন, যার আর্থিক মূল্য ৫,৯০০ কোটিরও বেশি। এরমধ্যে রয়েছে বৈশালী-দেওরিয়া রেলপথ প্রকল্প, যার খরচ ৪০০ কোটি টাকা, এবং এই রুটে একটি নতুন ট্রেন পরিষেবাও চালু করেন তিনি।
উত্তর বিহারে সংযুক্তির আরও এক মাইলফলক হিসেবে, পাটলিপুত্র (পাটনা) থেকে গোরখপুর (উত্তরপ্রদেশ) হয়ে মুজফ্ফরপুর ও বেতিয়া পর্যন্ত ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’ ট্রেনের উদ্বোধনও করেন তিনি।
‘মেক ইন ইন্ডিয়া – মেক ফর দ্য ওয়ার্ল্ড’ অভিযানের অংশ হিসেবে মারহোরা প্ল্যান্টে তৈরি একটি অত্যাধুনিক লোকোমোটিভ প্রধানমন্ত্রী গিনির উদ্দেশে রপ্তানির জন্য ফ্ল্যাগ অফ করেন। এটি ওই কারখানার প্রথম রপ্তানিযোগ্য ইঞ্জিন। এতে হাই হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন, উন্নত এসি প্রপালশন সিস্টেম, মাইক্রোপ্রসেসর-ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং পুনর্জননক্ষম ব্রেকিং প্রযুক্তি রয়েছে।
সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বিহারের মানুষকে বিশ্বাস করি… আমরা বিহারকে উন্নত করে তুলব।”