পটনা: কংগ্রেসের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মায়ের বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করার পর বিহারে এক বড় রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে, যার জেরে বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পটনা, মুজাফফরপুর এবং দারভাঙ্গা সহ বেশ কয়েকটি জেলায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে বিজেপি ও কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পাথর ছোঁড়া হয়, লাঠি ছোঁড়া হয় এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। বিজেপি নেতারা কংগ্রেসের কাছে জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার দাবি অব্যাহত রাখায় বিক্ষোভ এখন দিল্লিতেও পৌঁছেছে।
advertisement
এরই মধ্যে জন সুরজ পার্টির নেতা এবং রাজনৈতিক কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোর এই ঘটনার জন্য কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করেছেন। সমস্তিপুরে এক জনসভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে প্রশান্ত কিশোর বলেন, প্রধানমন্ত্রী বা তাঁর পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা অগ্রহণযোগ্য। তাঁর কথায়, “নরেন্দ্র মোদি কেবল একটি দলের নেতা নন, তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক বিরোধিতা ন্যায্য, কিন্তু কারও মা বা বোনকে নিয়ে দুর্ব্যবহার করা বা কুকথা বলা ঠিক নয়। কংগ্রেসের এর জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত।”
কিশোর আরও ব্যাখ্যা করে বলেন, যারা তাদের মঞ্চ থেকে এই ধরনের মন্তব্য করার সুযোগ দিয়েছেন, তাদেরই দায়িত্ব। তিনি বলেন, ”সরকারি নীতির সমালোচনা করা বা বিহারের উন্নয়নের অভাবের মতো বিষয়গুলি তুলে ধরা স্বাভাবিক ছিল, কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ রাজনীতির মর্যাদাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমি প্রতিদিনই বলি যে, প্রধানমন্ত্রী বিহারে ভোট চান কিন্তু গুজরাতে কারখানা স্থাপন করেন। এটি একটি বৈধ সমালোচনা। কিন্তু ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে সীমা অতিক্রম করা ভুল।”
বিষয়টি আদালত ও থানা পর্যন্ত গড়িয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে মুজাফফরপুরে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং পটনার দুটি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দারভাঙ্গায় পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়েছে। তা সত্ত্বেও, বিজেপি কর্মীরা তাদের বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন। দাবি করছেন কংগ্রেসকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
শুক্রবার, পটনার সাদাকাত আশ্রমে কংগ্রেসের রাজ্য সদর দফতর সহ বিহার জুড়ে কংগ্রেস অফিসের বাইরে বিজেপি কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। উভয় দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মুজাফফরপুরেও দুই দলের কর্মীরা জড়ো হয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
বিহারে ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিবেশে এই বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে, যেখানে আসন্ন নির্বাচনের আগে বিজেপি এবং কংগ্রেস উভয়ই তাদের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা চালাচ্ছে।