প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণের পরই সোশ্যাল মিডিয়া এবং রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের ঝড় উঠে ৷ পাকিস্তানকে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়ে যেখানে বিজেপি গর্ব করছে, সেখানে অন্যান্য বিরোধী দল প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণের সমালোচনায় মুখর ৷ তাদের মতে, মোদির এই বক্তব্য সংবেদনাহীন ৷
উরি হামলার জবাব দিতে দেশে জনমত তীব্র হচ্ছে। ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন গুজব ৷ সম্মুখ সমরের দাবিও তুলেছেন অনেকে ৷ এমতাবস্থায় শনিবার বিজেপির দলীয় অনুষ্ঠান কার্যত হয়ে উঠল পাকিস্তানকে বার্তা দেওয়ার মঞ্চ। তাকে ব্যবহার করেই প্রতিবেশী দেশকে চরম সতর্কতা প্রধানমন্ত্রীর। উরি হামলা নিয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট মোদির হুঁশিয়ারিতে।
advertisement
এদিনের সভায় নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য, গোটা দুনিয়ায় সন্ত্রাস রপ্তানি করছে পাকিস্তান। পাক প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাসবাদীদের লেখা ভাষণ পড়ছেন ৷ উরির হামলার পরও চলছে অনুপ্রবেশের চেষ্টা।
পাকিস্তানের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘হিম্মত হো তো আও! যদি হিম্মত থাকে তো পাকিস্তান দেশ থেকে গরিবি হঠাক। দেখি কোন দেশ থেকে আগে গরিবি হঠে! পাকিস্তানের জওয়ান এসো দেখি কে আগে গরিবি হঠাতে পারে দেশ থেকে। অশিক্ষার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেখি কে আগে জেতে! হিন্দুস্তান নাকি পাকিস্তান? ’’
ভাষণের প্রশংসা-
মোদির ভাষণের পর প্রংশসায় পঞ্চমুখ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ ৷ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের জনতাকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, ওরা কোথায় আর ভারত কোথায় পৌঁছে গিয়েছে ৷’ উরিতে শহীদ হওয়া ১৮ জন জওয়ানের মৃত্যুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে রবিশঙ্কর বলেছেন, ‘দেশ কিছুতেই উরি শহীদের মৃত্যুতে পাকিস্তানকে ক্ষমা করবে না ৷’
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের তীব্র প্রতিক্রিয়া পাক মিডিয়া ও সোশ্যালে
রাজ্য ক্রীড়া মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন সিং রাঠৌর বলেন,‘পাকিস্তানের নেতারা সন্ত্রাসের কথা বলে দেশের জনতাকে বোকা বানাচ্ছেন ৷ কিন্তু এর পরিণতি ভোগ করবে পাকিস্তানই ৷’
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে, মোদির নিন্দায় মুখর নটবর সিং ৷ একসময় ভারতের বিদেশমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন তিনি ৷ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের শোনার পর নটবর সিং উল্টে মোদিকে কিছু পরামর্শ দিতে চান ৷ তাঁর বক্তব্য, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগে নিজের মন্ত্রীসভার মন্ত্রীদের মুখে লাগাম পরানো উচিত ৷ কারণ, তাদের বড় বড় কথা শুনে মনে হয় যে কোনও সময় যুদ্ধ শুরু করে দেওয়া হবে ৷ কথায় কথায় যুদ্ধের কথা বললে আর সমরশঙ্খ ফুঁকলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না ৷ ’
অন্যদিকে, মোদির নিন্দায় মুখর নটবর সিং ৷ একসময় ভারতের বিদেশমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন তিনি ৷ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের শোনার পর নটবর সিং উল্টে মোদিকে কিছু পরামর্শ দিতে চান ৷ তাঁর বক্তব্য, ‘প্রধানমন্ত্রীর আগে নিজের মন্ত্রীসভার মন্ত্রীদের মুখে লাগাম পরানো উচিত ৷ কারণ, তাদের বড় বড় কথা শুনে মনে হয় যে কোনও সময় যুদ্ধ শুরু করে দেওয়া হবে ৷ কথায় কথায় যুদ্ধের কথা বললে আর সমরশঙ্খ ফুঁকলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না ৷ ’
নটবর সিং মনে করেন, পাকিস্তানকে নিয়ে এনডিএ-র বিদেশ নীতিই ঠিক ছিল ৷ তাঁর মতে, নেপাল ও বর্মা ছাড়া পাকিস্তানের মতো ‘প্রতিবেশী’-কে সামলাতে ভারত কূটনৈতিক রাস্তা নিলে সেটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে ৷ তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান যদি বলে আমরা ভারতে পরমাণু বোমা ফেলব তাহলে কী হবে! কিন্তু যে ধরনের হামলা হচ্ছে বা দেশে এখন যেকরম পরিস্থিতি তা যদি আরও গম্ভীর ওঠে, তাহলে যুদ্ধই একমাত্র সমাধান ৷ কিন্তু এইসব মন্ত্রীদের কোনও অভিজ্ঞতা নেই যে যুদ্ধ হলে কী হয় ৷ প্রথমবার মন্ত্রীসভায় এসে বড় বড় কথা বলছে ৷ প্রধানমন্ত্রীর উচিত আগে ওদের মুখ বন্ধ করা ৷ ’
কংগ্রেস মহাসচিব দিগ্বিজয় সিং প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের প্রবল আক্রমণাত্মক ভাষায় মোদির সমালোচনা করে বলেন, ‘বিজেপি বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী, যখন তিনি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন ক্রমাগত আক্রমণাত্মক ভাষায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে অক্ষম ও কমজোরি বলে সমালোচনা করতেন ৷ কিন্তু এখন উনি ঠিক সেই একই কাজ করছেন এবং বলছেন এরকমটাই একজন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর করা উচিত ৷’