এনডিটিভির রিপোর্ট অনুযায়ী, নওগাম থানায় আকস্মিক বিস্ফোরণে নয়জনের মৃত্যু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে পারের ছোট মেয়ে তাঁকে অনুরোধ করেন যেন তিনি সেদিন আর বাইরে না যান। ঠান্ডার কথা ভেবে মেয়েটি বলেছিল, “পাপা, যেও না।” কিন্তু পার তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেন, সামান্য কাজ বাকি আছে, শেষ করে শিগগিরই ফিরে আসবেন—যা শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যুর আগের শেষ কথা হয়ে দাঁড়ায়।
advertisement
এলপিজি এবং সিএনজি গ্যাসের মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ! ব্যবহারেও আলাদা, কোনটি কেমন বিশদে জেনে নিন
পিটিআই-র খবর অনুযায়ী, ৪৭ বছরের পার ১৪ নভেম্বর সারা দিন দায়িত্বশীল নাগরিকের মতো পুলিশ তদন্তকারীদের সঙ্গে ছিলেন। সদ্য ধরা পড়া এক ‘হোয়াইট কলার’ তন্ত্র মডিউলের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকের নমুনা সংগ্রহ ও প্যাকিংয়ের কাজে পুলিশকে সাহায্য করছিলেন তিনি।
সকাল ১০টায় কাজের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি মাঝে কয়েকবার বাড়ি ফিরেছিলেন—একবার জুমার নামাজের জন্য, পরে সন্ধ্যায় খাবার খেতে—তারপর আবার নমুনা সংগ্রহের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে থানার দিকে রওনা দেন। ফারিদাবাদ থেকে বাজেয়াপ্ত বিস্ফোরক-সংক্রান্ত সেই কাজ শেষ করতেই তিনি ফের বেরিয়েছিলেন।
রাতের সেই শেষ পর্যায়ের কাজের সময়ই নওগাম থানায় ভয়াবহ আকস্মিক বিস্ফোরণ ঘটে, যাতে পুলিশকর্মী ও সাধারণ নাগরিকসহ মোট নয়জন নিহত হন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী পার গুরুতর জখম অবস্থায় প্রাণ হারান। প্রথমে পরিবারকে জানানো হয়েছিল তিনি আহত, কিন্তু শনিবার ভোরের দিকে পুলিশ তাঁদের দেহ শনাক্ত করতে বলে।
ওয়ানাবাল এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। বাড়ির সামনে প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজন জড়ো হন, কান্নার শব্দ দূর থেকে শোনা যাচ্ছিল। স্থানীয়রা তাঁকে দৃঢ় চরিত্রের মানুষ হিসেবে মনে করেন, যিনি এলাকার মসজিদের সভাপতি ছিলেন এবং ওয়ানাবাল চৌকে তাঁর ছোট দর্জির দোকান থেকে উপার্জন করে স্ত্রী, মেয়ে ও দুই ছেলেকে সামলে রাখতেন।
বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে ছুটে যাওয়া বাসিন্দারা ধ্বংসস্তূপের ভয়াবহতা বর্ণনা করেছেন। কেউ কেউ প্রথমে “এয়ার ব্লাস্ট” মনে করেছিলেন, আবার অনেকে জানান, বিস্ফোরণের অভিঘাতে প্রায় এক কিলোমিটার দূরেও জানলার কাচ ভেঙে গিয়েছিল।
স্থানীয়রা পুলিশকে মৃতদেহ এবং আহতদের তুলে আনতে সাহায্য করেন। পিটিআই-কে এক ব্যক্তি বলেন, তিনি মাটিতে একটি হাত পড়ে থাকতে দেখেন; আর একজন জানান, পারের দেহ শনাক্ত করার সময় দেখা যায় তাঁর পা দু’টি ছিল না।
