মুম্বই থেকে কিছু দূরের শহরতলি নাল্লাসোপারার গঙ্গনিপাড়ায় স্বামী বিজয় চৌহান (৩৪)-এর সঙ্গে থাকত চমন দেবী (২৮)। সেখান থেকেই গত ২১ জুলাই বিজয়ের পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হয়। এর পরের দিন অর্থাৎ ২২ জুলাই সন্ধ্যায় পুণে থেকে গ্রেফতার করা হয় চমন দেবী এবং তার বছর কুড়ির প্রেমিক মনু শর্মাকে। পুলিশ জানিয়েছে যে, সপ্তাহ দুয়েক আগেই বিজয়কে খুন করে ঘরের মেঝের তলায় চাপা দিয়ে দিয়েছিল চমন দেবী এবং তার প্রেমিক। বুধবার পালঘরের এক আদালত আগামী ৩০ জুলাই পর্যন্ত অভিযুক্ত যুগলকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
advertisement
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে, নিজের বাড়িতে মেঝের টাইলস ঠিক করার জন্য নিজের ভাশুর অজয়কেই ডেকে পাঠিয়েছিল চমন দেবী। অভিযুক্ত মহিলা তার স্বামীর দাদাকে জানিয়েছিল যে, বাড়ির পাইপ লাইনে কিছু কাজের জন্য টাইলস সরাতে হয়েছে। সেই কারণেই তা ঠিক করতে হবে।
এদিকে অজয় দাবি করেছেন, ‘আমি জানতাম না যে, আমি নিজের ভাইকেই চাপা দিচ্ছি। তিনি আরও বলেন, ভাইয়ের স্ত্রী আমায় জানিয়েছিল যে, বাড়িতে পাইপলাইনে কাজ হওয়ার কারণে মেঝের টাইলস সরাতে হয়েছিল। তাই সেই টাইলস আমায় মেরামত করানোর জন্য আমায় ডেকে পাঠিয়েছিল।’
পুলিশ জানিয়েছে যে, সপ্তাহ দুয়েক আগে বিজয়কে খুন করে মেঝের তলায় চাপা দিয়ে দিয়েছিল চমন দেবী আর তার প্রেমিক। কিন্তু বিজয়ের দুই ভাই ওই বাড়িতে গিয়ে দেখেন যে, মেঝে থেকে পচা গন্ধ বার হচ্ছে। তখনই এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। বিজয়ের প্রতিবেশীরা তার ভাইদের জানান যে, বিজয়কে গত ১০ জুলাই থেকে দেখা যায়নি। এরপর ১৯ জুলাই থেকে বেপাত্তা বিজয়ের স্ত্রী চমন দেবীও।
এই বিষয়ে খবর পাওয়ামাত্রই বাড়িতে হানা দেয় পুলিশের একটি দল। চিকিৎসক আর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে মেঝে খুঁড়ে বিজয়ের মৃতদেহ তোলা হয়। এই বিষয়ে বিরারের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (জোন ৩) সুয়াচাস বাওচে সাংবাদিকদের বলেন যে, অভিযুক্ত চমন দেবী এবং মনু পাশাপাশি বাড়িতেই থাকত। তারা বিয়ে করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। যার জেরে তাঁকে রাস্তা থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে ওই যুগল।
হিন্দুস্তান টাইমস-এর রিপোর্টে আরও দাবি, বাড়ির মেঝের টাইলস সারাই করানোর জন্য বারবার অজয়কে কল করতে থাকে চমন দেবী। কিন্তু ১৯ জুলাইয়ের আগে সময় দিতে পারেননি অজয়। তিনি জানিয়েছিলেন যে, ‘বিজয় কেন ফোন তুলছে না, সেটা আমি ওর স্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম। তাতে ও জানায় যে, নতুন ফোন কিনেছে বিজয়। আর রাগে বাড়ি ছেড়ে কান্দিভলিতে কাজের জায়গাতেই রয়েছে সে। কিন্তু যখন আমি ওর কাজের জায়গায় ফোন করি, তখন সেখান থেকে আমায় জানানো হয় যে, আট দিন আগেই কাজ ছেড়ে দিয়েছেন বিজয়।’