পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের এই মেয়েকে বিপাকে ফেলেছিল ভাগ্য। তার বয়স যখন মাত্র ১০ মাস, তখনই দুর্ঘটনায় ভয়ঙ্কর ক্ষতি হয়েছিল আফসিনের। তার ঘাড় ৯০ ডিগ্রি বেঁকে গিয়েছিল। বোনের হাত থেকে পিছলে পড়ে গিয়েছিল আফসিন।
বাবা-মা তাকে একজন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। তাকে ওষুধ দেওয়া হয়। কিন্তু তার অবস্থার উন্নতি হয়নি। প্রবল ঘাড়ে ব্যথা তাকে ঘুমোতে দেয়নি রাতের পর রাত।
advertisement
আরও পড়ুন- 'আপনার পরামর্শ নিতে আসব', বিদায় লগ্নে মোদির লেখা চিঠি ছুঁয়ে গেল কোবিন্দকে
আফসিনের পরবর্তী চিকিৎসার জন্য টাকা খরচ করতে পারেননি তার বাবা-মা। আফসিন সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত হন। দুধরনের শারীরিক সমস্যার মুখোমুখি হওয়া এই মেয়েটির ভবিষ্যত কী, ভেবে সন্দিহান ছিলেন তার বাবা-মা। ১২ বছর ধরে ঘাড়ের অসহ্য ব্যথা সহ্য করছিল মেয়েটি।
আচমকাই নাটকীয় মোড় আসে তার জীবনে। বদলে যায় সব কিছু। মার্চ মাসে সীমান্তের এপারের একজন ডাক্তার এক পয়সাও না নিয়ে তার চিকিৎসা করার প্রস্তাব দেন।
বিবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালের ডাক্তার রাজাগোপালন কৃষ্ণন সফলভাবে তার ঘাড়ে অস্ত্রোপচার করেছেন। ডাঃ রাজাগোপালন কৃষ্ণান বিবিসিকে বলেছেন "সম্ভবত এটি বিশ্বের প্রথম এই ধরণের অপারেশন"।
ডাঃ রাজাগোপালন কৃষ্ণনকে আফসিনের কথা জানিয়েছিলেন ব্রিটিশ সাংবাদিক আলেকজান্দ্রিয়া থমাস। আফসিনকে নিয়ে তিনি একটি প্রতিবেদন লিখেছিলেন। তিনিই আফসিন ও তার পরিবারের সঙ্গে ডাক্তারের যোগাযোগ করিয়ে দেন।
আফসিনের ভাই ইয়াকুব কুম্বার বিবিসিকে বলেছেন, "আমরা খুব খুশি। ডাক্তারবাবু আমার বোনের জীবন বাঁচিয়েছেন। আমাদের কাছে তিনি দেবদূত।"
গত বছর আফসিনের চিকিৎসার জন্য তার পরিবার ভারতে এসেছিল। ইয়াকুব কুম্বার বলেছেন, "ডাঃ কৃষ্ণান আমাদের বলেছিলেন, অপারেশনের সময় তার হৃদপিন্ড বা ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে।"
আরও পড়ুন- রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু পরেন বিশেষ সিল্ক শাড়ি, গোটা ইতিহাস লুকিয়ে এরই মধ্যে!
আফসিনের ঘাড় ঠিক করতে প্রথমে চারটি বড় অপারেশন করতে হয়। ফেব্রুয়ারিতে মূল অস্ত্রোপচার করা হয়। ছঘণ্টাযঅর অপারেশন। ইয়াকুব কুম্বর বলেন, অপারেশন সফল হয়েছে।
অস্ত্রোপচার সফল হওয়ার পর ডাঃ রাজাগোপালন কৃষ্ণান সাংবাদিকদের বলেন, সঠিক চিকিৎসা ছাড়া আফসিন বেশিদিন বাঁচতে পারবে না। ছোট্ট মেয়েটি এখন হাসছে, কথা বলছে, খেলছে। ডাঃ রাজাগোপালন কৃষ্ণান প্রতি সপ্তাহে স্কাইপের মাধ্যমে তার পরীক্ষা করেন।