শুক্রবার রাতে ৯১ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে নিজের পরিবারের আরও চার সদস্যের সঙ্গে গাড়িতে করে শাহজাহানপুর যাচ্ছিলেন নির্যাতিতা মহিলা ও তাঁর মেয়ে ৷ রাত করে যাত্রা শুরু করায় সারা রাত গাড়ি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় ওই পরিবার ৷ রাত প্রায় আড়াইটে নাগাদ বুলন্দশহরের আগে দোস্তপুর এলাকায় পৌঁছলে হঠাৎ তাদের গাড়ির দিকে লোহার ভারী রড ছুঁড়ে মারা হয় ৷
advertisement
ঘটনার আকস্মিকতায় গাড়ি থামিয়ে দেওয়া হয় ৷ অভিযোগ, সেসময় ১০ থেকে ১২ জনের একটি ডাকাতদল রাস্তার পাশের ঝোপ থেকে বেরিয়ে তাদের ঘিরে ফেলে ৷ আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে প্রত্যেককে গাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে নামায় ডাকাতরা ৷ কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইল, নগদ টাকা, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং সমস্ত অলঙ্কার ও দামী জিনিস ৷
সর্বস্ব কেড়ে নেওয়ার পরও ওই পরিবারকে মুক্তি দেয়নি তারা ৷ বন্দুক দেখিয়ে তারা চালককে সড়কের উপর থেকে লাগোয়া মাঠে গাড়ি নামিয়ে আনতে বাধ্য করে ৷ এরপর পরিবারের বাকিদের পিছমোড়া করে বেঁধে ১৪ বছরের কিশোরী ও তাঁর ৪৫ বছরের মা-কে টেনেহিঁচড়ে গাড়ি থেকে প্রায় ৫০ মিটার দূরে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে ৷ প্রায় ঘণ্টা তিনেক অত্যাচার চালানোর পর রক্তাক্ত মা ও মেয়েকে সেখানেই পেলে চম্পট দেয় ডাকাতদল ৷
মাঠের কাদায় গাড়ির চাকা আটকে যাওয়ায় রাতভোর সেখানেই আটকে থাকে ওই নয়ডার বাসিন্দা ওই পরিবার ৷ পরে নিজেরাই বহু চেষ্টার বাঁধনমুক্ত হয়ে নির্যাতিতা মহিলা ও কন্যাকে নিয়ে নিকটবর্তী থানায় গিয়ে অভিযোগ জানায় ওই পরিবার ৷ প্রথমে ডিউটি অফিসার ঘটনায় পাত্তা না দেওয়ায় অভিযোগ নিতে চায় না৷ নির্যাতিত পরিবার অভিযোগের ভিত্তিতে কোতওয়ালি দেহাতের স্টেশন অফিসার এবং নাইট ডিউটি অফিসারকে সাসপেন্ড করেছে প্রশাসন ৷
অভিযোগ সামনে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর।মায়াবতীর বিএসপি ও বিজেপি অখিলেশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা গোল্লায় যাওয়ার অভিযোগ এনেছে।সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েও, মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব তদন্তের নিষ্পত্তির জন্য ডিজিকে চব্বিশ ঘন্টা সময় দিয়েছেন।
পুলিশ ইতিমধ্যেই ১৫জন সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় রয়েছে রাজস্থানের একটি কুখ্যাত দুষ্কৃতি দল । ডিআইজি (মীরাট রেঞ্জ) লক্ষ্মী সিংহ জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশ ছটি দল গঠন করেছে ৷ বুলন্দশহরের এসএসপি বৈভব কৃষাণ জানিয়েছেন, নির্যাতিতাদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে এবং দোষীদের চিহ্নিত করার জন্য রাজ্যের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।