ধর্ষকদের ফাঁসির পর তিনি খুশি৷ বলছেন যে অবশেষে মেয়ের ন্যায়বিচার হল৷ তবে সেইদিন ঠিক কী হয়েছিল উঠে এসেছে তার কথায়৷ তিনি জানিয়েছেন যে ১৬ই ডিসেম্বরের শীতের রাতে সফদরজং হাসপাতাল থেকে পুলিশ তাদের ফোন করেন৷ শুনেই তড়িঘড়ি ছুটে যান তারা৷ গিয়ে দেখতে পান যে মেয়ের শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে৷ হাসপাতালের ইউনিফর্ম পরানো হয়েছিল নির্ভয়াকে৷ কিন্তু সেই পোশাক উপেক্ষা করেই রক্তে ভেসেছিল মেয়ের দেহ৷ সারা শরীরজুড়ে ছিল ক্ষতচিহ্ন৷ এমনকী কিছু জায়গায় মাংসও বেরিয়ে এসেছিল, জানিয়েছেন আশাদেবী৷
advertisement
কাউকে এই খবর আমরা জানানোর সময় পাইনি৷ দু’দিন ধরে হাসপাতালেই ছিলাম৷ বলছেন তিনি৷ খবর ছড়িয়ে পড়তেই তারপর একে একে সব আত্মীয় বন্ধুরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন৷ শুরু হয় নির্ভয়ার চিকিৎসা৷ কিন্তু মেয়ের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলা সম্ভব হত না তাদের ৷ কারণ নির্ভয়া খুব দুর্বল ছিলেন এবং চিকিৎসকরাও বেশি কথা না বলতে মানা করতেন৷ মেয়ের কী হয়েছে, কীভাবে হয়েছে, সেসবও জিজ্ঞাসা করতে বারণ করা হয়েছিল৷
মা বলছেন যে মেয়ের শরীরে নানা অস্ত্রোপচার হয়েছিল৷ রক্তও দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তা অনেক সময়ই নিতে পারেননি নির্ভয়া৷ শরীর থেকে সেই রক্ত বেরিয়ে আসত৷ চোখে-মুখেই স্পষ্ট ছিল ক্লান্তি ও ধকলের ছাপ৷ তাই এই অবস্থায় মেয়ের সঙ্গে সেভাবে কোনও কথাই হয়নি তাদের৷ ঠিক করে কথা বলতেও সমস্যা হত নির্ভয়ার বলছেন আশাদেবী৷ সেই সব দিনের স্মৃতি কখনও ভোলার নয়৷
সেই সময় ছিল দুর্বিশহ৷ ছোট বাচ্চাদের ঘরে রেখেই নির্ভয়ার জন্য ছু়টেছেন তার মা ও বাবা৷ দু’দিন তারা বাড়িতে একলাই ছিল৷ কোনও খাবার জোটেনি তাদের৷ কারণ মেয়েকে হাসপাতালে দেখে মাথার ঠিক ছিল না নির্ভয়ার বাবা মায়ের৷ তার বুঝেই উঠতে পারছিলেন না কী করবেন৷ ২ দিন পর মেয়ের হুশ ফেরে, তখনই বাড়িতে বাচ্চাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা৷ মেয়ের সঙ্গে কাটানো শেষ সময়ের স্মৃতি যেন এখনও টাটকা আশাদেবীর৷