অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগছে, নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন হওয়ার পরে পুরনো ভবনের কী হবে? দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই ভবন কি নষ্ট করে দেওয়া হবে? আরও নানা প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে এই ভবন ঘিরে। সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়, নতুন সময়ের দাবি মেনেই সংসদ ভবন পালটানো দরকার। পুরনো ভবন অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে অকেজো হয়ে পড়েছে বলেই সরকারের দাবি ছিল। সেই জন্য প্রায় দু’বছর ধরে তৈরি হয়েছে নতুন সংসদ ভবন।
advertisement
ভারতের পুরনো সংসদ ভবনের বয়স ৯৬। ১৯২৭ সালে ভবনটির উদ্বোধন করেন বড়লাট লর্ড আরউইন। তখন অবশ্য এই ভবনের নাম ছিল ‘কাউন্সিল হাউস’। ভিতরে বসত কেন্দ্রীয় আইনসভা। মাত্র দু-বছর পরেই, ১৯২৯ সালের ৮ এপ্রিল এই ভবনের ভিতরেই দুই তরুণ বিপ্লবী বিভিন্ন অত্যাচারী ব্রিটিশ আইনের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে বোমা নিক্ষেপ করেন। গোটা ভবন কেঁপে যায় তাঁদের ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ ধ্বনিতে। স্বেচ্ছায় ধরা দিয়েছিলেন তাঁরা। ফাঁসির দড়িতে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন তাঁদের একজন। ভারতের স্বাধানীনতা সংগ্রামের দুই অবিস্মরণীয় প্রেরণা,ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত। স্বাধীনতার পরে এই কাউন্সিল হাউসেরই নাম পাল্টে রাখা হয় সংসদ ভবন।
আরও পড়ব: নতুন সংসদ ভবনের প্রতিটি ইট গরিবের কল্যাণে নির্মিত: নরেন্দ্র মোদি
ভারতের ইতিহাসে একাধিক স্মরণীয় দিনের সঙ্গে এই ভবনের নাম জড়িয়ে রয়েছে। স্বাধীনতার সময়েও এই ভবন কার্যকরী ছিল। গণতান্ত্রিক ভারতের প্রতীক সংবিধানও এই সংসদ ভবনেই গৃহীত হয়েছিল। ১৯৫৬ সালে আরও দুটি তলা যোগ করা হয় এই ভবনে। ২০০৬ সালে একটি সংগ্রহশালাও তৈরি হয়। কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী জানান, নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধন হওয়ার পরেও পুরনো ভবনটি যথাস্থানেই থাকবে। সেটি ভেঙে ফেলার কোনও পরিকল্পনাই নেই সরকারের। বরং বড় আকারের মিউজিয়াম হিসাবে সংসদ ভবনকে কাজে লাগানো হবে। সাধারণ মানুষ যেন ভবনে ঢুকে ঘুরে দেখতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও থাকবে। অধিবেশনের জায়গায় বসারও সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। আগামী দিনে পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠবে এই সংসদ ভবন।