নবীন পট্টনায়েকের রাজনৈতিক জীবনের উত্থান যথেষ্ট চমকপ্রদ৷ ১৯৯৭ সালের ১৭ এপ্রিল ওড়িশার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজু পট্টনায়েকের মৃত্যুর পর রাজ্যে রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি হয়৷ তৎকালীন জনতা দলের নেতারা সেই সময় বিজু পট্টনায়েকের মৃত্যুতে তৈরি হওয়া শূন্যস্থান পূরণে একজন উপযুক্ত মুখ খুঁজছিলেন৷ বিজু পট্টনায়েকের মৃত্যুতে ওড়িশাবাসীর সমবেদনা কাজে লাগানোও ছিল জনতা দলের নেতাদের উদ্দেশ্য৷ সেই সময় নবীন পট্টনায়য়েকের বয়স ৫১৷ শেষ পর্যন্ত বিজু পট্টনায়েকের পুত্র নবীনকেই বেছে নেন তাঁরা৷
advertisement
বিজু পট্টনায়েকের মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে নবীনের হাতেই দলের ব্যাটন তুলে দেওয়া হয়৷ দলের নাম বদলে রাখা হয় বিজু জনতা দল৷ ওড়িশার আসকা লোকসভা কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে সহজেই জয় পান নবীন৷
১৯৯৮ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকারে স্টিল এবং খনি দফতরের মন্ত্রী করা হয় নবীনকে৷ কিন্তু ২০০০ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব ছেড়ে ওড়িশার বিধানসভা নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি৷ সেই সময় সুপার সাইক্লোন বিধ্বস্ত ওড়িশার পুনর্বাসন যথাযথ না হওয়ায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকারের উপরে ক্ষোভ বাড়ছিল মানুষের৷ যে ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে বিজেপি-র সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতা দখল করে বিজু জনতা দল৷ মুখ্যমন্ত্রী হন নবীন পট্টনায়েক৷ ২০০০ সালের ৫ মার্চ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন তিনি৷
সেই শুরু, এর পর থেকে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর পদে দিন দিন জনপ্রিয়তা বেড়েই চলেছে নবীন পট্টনায়েকের৷ দু দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকলেও শাসক বিরোধী হাওয়ায় টলেনি নবীনের মুখ্যমন্ত্রী পদ৷ বরং দেশের মূল দুই রাজনৈতিক শক্তির সঙ্গে সমদূরত্ব বজায় রাখা, দুর্নীতি বিরোধী ভাবমূর্তি গড়ে তুলে মৃদুভাষী নবীন ওড়িশাবাসীর আস্থা অর্জন করে নিয়েছেন৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, দেশের অন্যান্য আঞ্চলিক অনেক নেতার মতো জাতীয় স্তরে উচ্চাশা না রেখে নবীন ওড়িশাতেই নিজের পায়ের তলার জমি শক্ত করায় বরাবর মনোনিবেশ করেছেন৷ যা তাঁর সাফল্যের অন্যতম কারণ বলেই ধরে নেওয়া হয়৷