নাগপুরের মহল এলাকায় এই গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে৷ যে গাড়িগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় সেগুলি থেকে বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া গিয়েছে৷ দুটি জেসিবি মেশিনেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়৷ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে উন্মত্ত জনতার আক্রমণে আহত হন এক দমকল কর্মী৷
আরও পড়ুন: সুকান্তই থাকছেন না দিলীপ ফিরছেন? বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদে কে, দুই বৈঠক ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে
advertisement
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মোট চারজন আহত হয়েছেন৷ উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য টিয়ার গ্যাসের শেল ফাটানোর পাশাপাশি লাঠি চার্জও করে পুলিশ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মহল সহ নাগপুরের সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷ নতুন করে যাতে আর কোনও উত্তেজনা না ছড়ায়, সে বিষয়টিও নজরে রাখছে পুলিশ প্রশাসন৷
ডিসিপি অর্চিত চন্দক দাবি করেছেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকেই এই অশান্তির ঘটনা ঘটেছে৷ তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই পুলিশ কর্তা৷ পাথর ছোড়ার মতো ঘটনায় যাতে কেউ যুক্ত না হন, সেই আবেদনও করেছেন তিনি৷ পরিস্থিতি শান্ত করতে গিয়ে বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও আহত হন৷ অন্তত চারটি গাড়িতে আগুন ধরানো হয়৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার ঘটনাও ঘটে৷ অশান্তির এই ঘটনার পর উপদ্রুত এলাকাগুলিতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়৷
শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার পর থেকে মধ্য নাগপুরের মহল এলাকায় অশান্তি শুরু হয়৷ তার আগে বিকেলবেলা ঔরঙ্গজেবের সমাধিস্থল অন্যত্র সরানোর দাবিতে একটি মিছিল বের হয় ওই এলাকায়৷ শান্তি বজায় রাখার জন্য সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন করেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ৷ গুজবে কান না দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং নাগপুরের সাংসদ নীতিন গড়কড়িও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে দাবি করেছেন, গুজব থেকেই এই অশান্তির ঘটনা ঘটেছে৷
নীতিন গড়কড়ি ভিডিও বার্তায় আবেদন জানান, ‘আমি আশ্বস্ত করছি এই অশান্তির ঘটনার পিছনে যারাই দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করবে পুলিশ এবং প্রশাসন৷ মুখ্যমন্ত্রীকে গোটা ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে৷ তাই কেউ কোনও গুজবে কান দেবেন না৷’
মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশও জানান, ‘নাগপুরের মহলে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা খুবই নিন্দনীয়৷ পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়েছে৷ আমি পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছি, অশান্তির পিছনে যারাই থাকুক না কেন কঠোর পদক্ষেপ করতে হবে৷ যারা সমাজে অশান্তি ছড়াবে, তাদের কাউকে রেয়াত করা হবে না৷ প্রত্যেকের কাছে আমার আবেদন, নাগপুরকে অশান্ত হতে দেবেন না৷ কেউ অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’
যদিও এই পরিস্থিতির জন্য ফড়ণবীশ সরকারকেই দায়ী করেছে বিরোধীরা৷ উদ্ধব ঠাকরে পন্থী শিবসেনার সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘মহারাষ্ট্র সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে গোটা রাজ্যের সর্বনাশ করছে৷ যার পরিণতি হতে চলেছে ভয়ঙ্কর৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এলাকা নাগপুরেই এমন ঘটনা ঘটছে৷’ কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও এই ঘটনার জন্য রাজ্য সরকারকেই দায়ী করা হয়েছে৷ মহারাষ্ট্রের কংগ্রেস সভাপতি হর্ষবর্ধন সপকলের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরেই উস্কানিমূলক বক্তব্য রাখছিলেন রাজ্যের মন্ত্রীরা৷