সোমবার মেঘালয়ের এই সব বিধায়ক এসে দেখা করেন মমতা বন্দোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে। আর তার পরেই মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা বলেন, "আগামী ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে গোটা রাজ্যে তৃণমূলের পতাকায় ছেয়ে যাবে। দেখতে থাকুন। আমরা, দেশের মানুষরা কি সত্যিই ন্যায়বিচার পাচ্ছি ? মানুষের বিশ্বাস, ভরসা কিন্তু আমাদের ওপরেই থাকে। সে আমরা যেখানেই থাকি। শাসক বা বিরোধী। মমতা বন্দোপাধ্যায় আমাদের ন্যায়-বিচার দেবেন। তাই বাংলার পাশাপাশি শিলংয়েও ফুটবে জোড়া ফুল।"
advertisement
আরও পড়ুন: NRC নিয়ে কী অবস্থান কেন্দ্রের? তৃণমূল সাংসদের প্রশ্নের জবাব দিল শাহের মন্ত্রক
মঙ্গলবার কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কংগ্রেস ত্যাগী বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমা। সাংবাদিক সম্মেলনে মুকুল বলেন, “২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে আমরাই সরকারে আসব। কিন্তু কোনও কারণে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পেলেও ভোটের ফলে সর্ববৃহৎ দল হিসেবে আমরাই আত্মপ্রকাশ করি। কিন্তু তার পর কোন পদ্ধতিতে মেঘালয়ে সরকার গঠন হয়েছিল তা আপনারা সকলেই জানেন। গণতন্ত্রে বিরোধী দলের ভূমিকা অপরিসীম। জনবিরোধী কাজকে বাধা দেওয়া ও সরকারে ভুলগুলি তুলে ধরাই বিরোধী দলের প্রধান দায়িত্ব। আমরা সেই দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করে গিয়েছি। কিন্তু বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমরা সঠিকভাবে বিরোধী দলের নীতি পালন করতে পারিনি। দলীয় নীতি মেনে চলতে গিয়ে জনস্বার্থের সঙ্গে আপোষ করতে হয়েছে। তাই আমরা তৃণমূলে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"
আরও পড়ুন: বঙ্গ বিজেপি-তে প্রশান্ত কিশোরের গোপন লোক! মারাত্মক অভিযোগ তথাগত রায়ের
২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে মেঘালয়ে মূল লড়াই ছিল কংগ্রেস ও ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির মধ্যে। ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করেছিল বিজেপি। পাহাড়ে ঘেরা এই রাজ্যে ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে সবথেকে বেশি আসন পেয়েছিল মুকুল সাংমার নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস। ২১ টি আসনে নির্বাচিত হন কংগ্রেস প্রার্থীরা। অন্যদিকে ২০ আসন পায় এনপিপি, বিজেপির ভাগ্যে জোটে ২ টি আসন। এরপর বিজেপি ও আঞ্চলিক কিছু দলের সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ে এনপিপি। কংগ্রেস-সহ বিজেপি বিরোধী দলগুলির অভিযোগ ছিল, বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদনের মাধ্যমে ও বিজেপি-র সহায়তায় সরকার গড়েছে এনপিপি।
মেঘালয়ে বিরোধী দলে ছিল কংগ্রেস। এরপর থেকে ৩ কংগ্রেস বিধায়ক শাসক শিবিরে যোগ দেওয়ায় কংগ্রেসর বিধায়ক সংখ্যা কমে ১৭ হয়। সেই ১৭ জন বিধায়কের মধ্যে ১২ জনই তৃণমূলে যোগ দেওয়া বিরোধী দলের মর্যাদা হারাবে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে বিরোধী দলের মর্যাদা চেয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়েছেন মুকুল সাংমা। ইতিমধ্যেই মেঘালয়ে ইউনিট খুলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। চার্লস পিংরোপকে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই সুস্মিতা দেবের মতো নেত্রী কংগ্রেস ছেড়েছেন। গোয়াতেও ক্ষমতা বাড়াচ্ছে তৃণমূল। তাছাড়া, কীর্তি আজাদের মতো নেতা যোগ দিয়েছেন ঘাসফুল শিবিরে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি অবশ্য জানিয়েছেন, “কংগ্রেসকে ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। সমগ্র উত্তর পূর্বাঞ্চল জুড়েই এই ষড়যন্ত্র চলছে। দিদি-মোদী সমঝোতা হয়েছে। কংগ্রেসকে দুর্বল করার জন্য দল ভাঙাচ্ছে তৃণমূল। আমি তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ করছি, যোগ দেওয়া বিধায়কদের পদত্যাগ করতে বলুন তৃণমূল নেতৃত্ব।”
আবীর ঘোষাল