নয়াদিল্লি: নেটফ্লিক্সে Money Heist দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে দিল্লির একটি গ্যাং একটি জটিল পরিকল্পনার মাধ্যমে ১৫০ কোটি টাকা চুরি করেছে। গ্যাংয়ের সদস্যরা থ্রিলারের চরিত্রগুলির নামে নিজেদের নামকরণও করেছিল। তারা অনলাইনে মানুষকে প্রতারণা করে আরও ২৩ কোটি টাকা লুঠ করেছে। ওই চক্রের সদস্যদের মধ্যে যাদের শনাক্ত করা হয়েছে, তারা হল অর্পিত, প্রভাত এবং আব্বাস। তাদের দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
advertisement
তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করে ভালো রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষকে প্রতারণা করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তদন্ত সূত্রে উঠে এসেছে, ওই চক্রের সদস্যরা ওয়েব সিরিজ দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সিরিজের চরিত্রের নামেই নিজেদের নামকরণ করেছিল।
অভিযুক্ত অর্পিত, পেশায় একজন আইনজীবী, নিজেকে প্রোফেসর নাম দিয়েছিল। স্নাতক প্রভাত নিজের নাম দিয়েছিল আমান্ডা। আব্বাসের নাম ছিল ফ্রেডি। তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কয়েকটি গোপন গ্রুপ তৈরি করেছিল, সেখানে তারা স্টক মার্কেটে বিনিয়োগে উচ্চ রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে মানুষকে প্রলুব্ধ করত।
কীভাবে তারা মানুষকে প্রতারণা করেছে? সোশ্যাল মিডিয়া এবং WhatsApp-এ ডজন ডজন গ্রুপ তৈরি করেছিল তারা। যেখানে তারা স্টক মার্কেট পরামর্শ এবং টিপস শেয়ার করত। তারপর তারা প্রতিশ্রুতি দিত, তাদের মাধ্যমে বিনিয়োগ করলে চমৎকার রিটার্ন পাওয়া যাবে। প্রথমে অল্প অর্থের রিটার্ন দিয়ে তারা সেই গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জন করত। তারপর কেউ বেশি পরিমাণে বিনিয়োগ করলেই অ্যাকাউন্টটি ব্লক হয়ে যেত।
যারা তাদের টাকা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করত, তাদের আরও অর্থের প্রলোভন দিত তারা। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে গ্যাংটি সারা দেশে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষকে প্রতারণা করেছে। পুলিশ বলেছে, এই গ্যাংয়ের সদস্যরা বিলাসবহুল হোটেলে থাকত। শুধুমাত্র মোবাইল ফোন এবং ল্যাপটপ ব্যবহার করে প্রতারণা চালাত তারা। তদন্তের অংশ হিসাবে পুলিশ উত্তর প্রদেশের নয়ডা ও পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়িতে বেশ কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে। এখন পর্যন্ত পুলিশ ১১টি মোবাইল ফোন, ১৭টি SIM কার্ড, ১২টি ব্যাংক পাসবুক এবং চেকবুক, ৩২টি ডেবিট কার্ড এবং অসংখ্য অনলাইন লেনদেন এবং হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের স্ক্রিনশট উদ্ধার করেছে। লেনদেন, কল রেকর্ড এবং ইন্টারনেট লগের বিশ্লেষণ করে পুলিশ জানতে পেরেছে কিছু চিনা কয়েকজন সন্দেহভাজনও প্রতারণায় জড়িত ছিল।
