কিন্তু কেন এমন কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা? কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যে অভূতপূর্ব এবং জনমোহিনী বাজেট পেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে তো এই ঘটনা খাপ খায় না! তা হলে?
এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর চলতি বাজেট-সক্রান্ত এক বিশেষ বক্তব্যে চোখ না রাখলেই নয়। তিনি সোমবার সংসদে তাঁর বাজেট বক্তৃতায় জানিয়েছেন যে ইলেকট্রনিক শিল্পের বেশ কিছু জিনিসের আমদানির উপরে অতিরিক্ত ২.৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। এদের মধ্যে রয়েছে সার্কিট বোর্ড, ক্যামেরা কম্পোনেন্ট এবং মোবাইল ফোন কানেক্টর। আমদানি শুল্ক যে বাড়তে পারে, সে ভবিষ্যদ্বাণী আগেই করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। জানিয়েছিলেন, মূলত দেশীয় শিল্পকে সমর্থন দিতেই সরকার এই পদক্ষেপ করছে। এর জেরে সস্তা ইলেকট্রনিক পণ্য আমদানির প্রবণতা কমবে। প্রসঙ্গত, এই সমস্ত পণ্যের বেশির ভাগটাই আমদানি রা হত চিন থেকে। তাই এই ভাবে চিনের অর্থনীতিতে একটা ধাক্কা দেওয়া হল বলেও মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
advertisement
কিন্তু IDC India, যারা মোবাইল ডিভাইজ নিয়ে রিসার্চ করে, তার ডিরেক্টর নভকেন্দর সিং সাফ জানাচ্ছেন যে একই সঙ্গে দেশের মানুষও একটা জোরদার ধাক্কা খেতে চলেছে। এই সমস্ত পণ্য আমদানি করা হত বলে দেশে তা তৈরির খরচ বেঁচে যেত। ফলে, কম খরচে তা জুড়ে দিয়ে বাজেট মোবাইল ফোন তুলে দেওয়া যেত ক্রেতার হাতে। কিন্তু এবার থেকে আর সেটা হবে না। এই সব কিছু দেশে তৈরি করতে হবে, স্বাভাবিক ভাবেই তার উৎপাদন মূল্য যাবে বেড়ে। পাশাপাশি সিং আরেকটা কথাও উল্লেখ করতে ভুলছেন না। এই বাজেট ফোন-নির্মাতারা এত দিন খুব বেশি লাভ রেখে ফোন বিক্রি করেনি। তাদের লভ্যাংশ ছিল এমনিতেই কম। ফলে, এখন আর সেই লভ্যাংশ বজায় রেখে ফোন বিক্রি করা সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে লোকসান হয়ে সংস্থার ভরাডুবি হবে।
একই সঙ্গে সিং জানিয়েছেন যে দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়টায় ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে অনেক মোবাইল ফোনের বাক্সেই আর চার্জার মিলবে না। উৎপাদন মূল্য বেড়ে যাচ্ছে বলে এই দিক থেকে লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে সংস্থাগুলো। অন্য দিকে, Counterpoint India-র সিনিয়র রিসার্চ অ্যানালিস্ট প্রাচীর সিংয়ের বক্তব্য এই যে অর্থমন্ত্রকের এ হেন সিদ্ধান্তে এই শিল্পে GST-ও বেড়ে যাতে পারে।