মুসকান এবং সাহিল যে সৌরভকে খুনের পর তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে ড্রামে ভরে রেখে সিমেন্ট দিয়ে সিল করে দিয়েছিল, সেই তথ্য আগেই সামনে এসেছে৷ হিন্দুস্তান টাইমস-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ৩ তারিখ রাতে মুসকান সৌরভের মায়ের রান্না করে দেওয়া কোফতার মধ্যে প্রথমে ঘুমের ওষুধ মেশায়৷ সেই খাবার খেয়ে সৌরভ আচ্ছন্ন হয়ে পড়তেই সাহিলকে ফোন করে সে৷ সাহিল মুসকান এবং সৌরভের ভাড়া বাড়িতে আসার পর ঘুমন্ত সৌরভের উপরে চড়াও হয় দু জনে৷ অসহায় সৌরভের তখন ন্যূনতম প্রতিরোধের ক্ষমতাও ছিল না৷
advertisement
আরও পড়ুন: পড়ে রইল বই, ব্যাগ! বাসন্তীতে টোটোর বেপরোয়া গতির বলি ছাত্রী, স্কুলে যাওয়ার পথেই মর্মান্তিক পরিণতি
ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সৌরভকে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে প্রথমে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে মুসকান ও সাহিল৷ এর পর সৌরভের দেহটি বাথরুমে নিয়ে গিয়ে ক্ষুর দিয়ে ধড় থেকে মাথা আলাদা করে দেয় সাহিল৷ কব্জির কাজ থেকে সৌরভের হাতের দুটি পাতাও কেটে নেয় সে৷
এর পর সৌরভের মুণ্ডবিহীন সেই দেহ ঘরের বক্স খাটের ভিতরে ঢুকিয়ে দেয় সাহিল ও মুসকান৷ তাদের পরিকল্পনা ছিল, পরের দিন দেহটি ছোট ছোট টুকরো করে প্লাস্টিক ব্যাগে ভরে নির্জন জায়গায় ফেলে দেওয়ার৷ পুলিশ সূত্র উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়েছে, সৌরভের দেহ বক্স খাটের ভিতরে রেখে রাতে তার উপরে পাতা বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে মুসকান৷ আর সৌরভের কাটা মাথা এবং দুটো তালু ব্যাগে ভরে নিয়ে বাড়ি চলে যায় সাহিল৷
পরের দিন সেই কাটা মাথা এবং হাতের তালু নিয়ে ফের মুসকানের কাছে আসে সৌরভ৷ এর পর পরিকল্পনায় বদল করে তারা৷ প্ল্যাস্টিক ব্যাগে ভরে দেহ লোপাট করার পরিকল্পনা বদল করে বড়সড় নীল ড্রাম কিনে আনে তারা৷ সঙ্গে কেনা হয় মাংস কাটার ছুরি এবং সিমেন্ট৷ এর পর সৌরভের চার টুকরো করে, কাটা মাথা, হাত সমেত ওই ড্রামে ভরে সিমেন্ট দিয়ে সিল করে দেয় মুসকান ও সাহিল৷ সেই ড্রাম মুসকান ও সৌরভের ভাড়া বাড়িতেই পড়া ছিল৷
পরিকল্পনা মাফিক সবকিছু মেটার পর গাড়ি ভাড়া করে হিমাচল প্রদেশের মানালি, সিমলা, কসৌলে ঘুরতে চলে যায় সাহিল ও মুসকান৷ সেখান থেকে ফেরার পর কয়েকদিন আগে বাড়িতে রাখা ওই নীল ড্রাম সরানোর পরিকল্পনা করে দু জনে৷ তাতেই বাঁধে বিপত্তি৷ ড্রাম সরানোর জন্য যে শ্রমিকদের ভাড়া করা হয়, ড্রামের বিপুল ওজন দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়৷ প্রথমে মুসকান দাবি করে, ড্রামে বাড়ির জঞ্জাল রয়েছে৷ কিন্তু টানাহ্যাঁচড়া করতে গিয়ে কোনওভাবে ড্রামের ঢাকনা খুলে যায়৷ এর পরই ফাঁস হয়ে যায় নৃশংস এই হত্যাকাণ্ড৷