এদিন এক্স হ্যান্ডেলে (আগে ট্যুইটার) মমতা লেখেন, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি, ফৌজদারি কার্যবিধি এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইনের প্রতিস্থাপনের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তৈরি খসড়াগুলি পড়েছি। স্তম্ভিত হয়েছি যে, এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে নীরবে অত্যন্ত কঠোর এবং ড্রাকোনিয়ান নাগরিক বিরোধী বিধান প্রবর্তনের একটি গুরুতর চেষ্টা করা হচ্ছে। আগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন ছিল; এখন, এই বিধানগুলি প্রত্যাহারের নামে, তারা প্রস্তাবিত ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় আরও কঠোর এবং স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থা প্রবর্তন করছে, যা নাগরিকদের আরও মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।’
advertisement
আরও পড়ুন: ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন নবান্ন! পুজোর ছুটি বাতিল একাধিক আধিকারিকের, কড়া বার্তা
এরপরেই মমতা লেখেন, ‘বর্তমান আইনগুলি কেবল আকারে নয়, অভ্যন্তরীণ দিক থেকেও ঔপনিবেশ ধারণামুক্ত হওয়া উচিত।’ কেন্দ্রীয় সরকারকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ, ‘ফৌজদারি বিচারব্যবস্থার এই নয়া ব্যবস্থা প্রণয়নের ক্ষেত্রে গণতন্ত্রের দিকটি গুরুত্ব সহকারে অধ্যয়ন করার জন্য দেশের আইনবিদ এবং জনস্বার্থ আন্দোলনকারীদের খসড়াগুলি দেখতে অনুরোধ করুন।’
মমতা জানিয়েছেন, স্ট্যান্ডিং কমিটিতে যখন এই বিলগুলির খসড়া প্রসঙ্গ উপস্থাপিত হবে, তখন তৃণমূলের সদস্যেরা এই বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য সুস্পষ্ট ভাবে জানাবেন। মমতার মতে, ‘অভিজ্ঞতার আলোকে আইনের উন্নতি করা দরকার, কিন্তু ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ববাদকে পিছনের দরজা দিয়ে দিল্লিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।’
আরও পড়ুন:৭০-৮০ টাকায় দেদার খাচ্ছেন, জানেন কি বিরিয়ানিতে মেশানো হচ্ছে কাঠ পালিশের রঙ!
প্রসঙ্গত, গত ১১ অগস্ট সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করেছিলেন৷ জানিয়েছিলেন, ১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ বা ভারতীয় দণ্ডবিধি আইন প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ আইন দিয়ে। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ বা ফৌজদারি দণ্ডবিধি আইন প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ আইনের দ্বারা এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ বা ভারতীয় সাক্ষ্য আইন প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য বিল’-এর মাধ্যমে। এর পরেই বিল তিনটি সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় শাসকদলের ‘ইচ্ছে’ তিন মাসের মধ্যেই তিনটি বিল নিয়ে স্থায়ী কমিটি রিপোর্ট পেশ করুক। সে ক্ষেত্রে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে, এ বছরের শেষে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনেই তিনটি বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্তু, কেন্দ্রের এই তাড়াহুড়োয় যে তৃণমূল কংগ্রেস সায় দেবে না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টে তা একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে গেল বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।